টেক্সটাইল জগতে হোমে টেক্সটাইল একটা বিশাল স্থান দখল করে আছে।এই হোম টেক্সটাইলে বাংলাদেশ এখন অনেকটাই এগিয়ে গেছে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে। এক যুগ আগেও আন্তর্জাতিক বাজারে হোম টেক্সটাইলের পণ্য বলতে ক্রেতারা বুঝত চীন, ভারত, পাকিস্তান ও তুরস্কের কথা। এক যুগ পরে এসে চারটি দেশের পাশে আরেকটি নাম যুক্ত হয়েছে। দেশটি হলো বাংলাদেশ। ২০০৪-০৫ অর্থবছরে হোম টেক্সটাইল রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করেছিল সাড়ে ১৫ কোটি ডলার। আর গত ২০১০-১১ অর্থবছরে এই রপ্তানি আয় বেড়ে হয়েছে প্রায় ৭৯ কোটি ডলার। প্রায় প্রতিবছরই তা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।
গত বছরের রপ্তানিতে আগের বছরের তুলনায় ৯৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, এর একটা বড় কারণ হলো বিশ্ববাজারে সুতার দাম বেড়ে যাওয়া, যা উৎপাদনের খরচ বাড়িয়েছে। ফলে, এই খরচ তুলতে রপ্তানিকারকেরা স্বাভাবিকভাবেই পণ্যের দর বাড়িয়েছে।
তার পরও হোম টেক্সটাইল রপ্তানির এই প্রবৃদ্ধি যে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি এই পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধিরই প্রতিফলন, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। হোম টেক্সটাইলের মধ্যে আছে বিছানার চাদর ও আচ্ছাদন, বালিশের কভার, তাকিয়া,ছোট গালিচা, পর্দা, ছোট তোশক, দস্তানা, টেবিল ক্লথ, রুমাল প্রভৃতি। বর্তমানে শুধু ইউরোপেই হোম টেক্সটাইলের ৪০০ কোটি ডলারের বেশি বাজার রয়েছে।
আইকিয়া, ক্যারিফোর, অ্যাসডা, লিটল উড, মরিস ফিলিপস, ওয়ালমার্ট ও রেড ক্যাটের মতো ইউরোপ ও আমেরিকার বড় বড় খুচরা বিপণি সংস্থাগুলো বাংলাদেশ থেকে বর্ধিত হারে হোম টেক্সটাইলের বিভিন্ন সামগ্রী আমদানি করছে। এভাবে চাহিদা বাড়তে থাকায় দেশীয় উৎপাদকেরাও তাদের উৎপাদনের পরিসর বাড়াচ্ছে, যাচ্ছে বড় ধরনের শিল্পের সম্প্রসারণে।
তবে বাংলাদেশে ওভেন পোশাক বা নিট পোশাকের তুলনায় হোম টেক্সটাইলের কারখানা খুবই কম। একদিকে বিশেষায়িত, অন্যদিকে উচ্চ বিনিয়োগের প্রয়োজন বলে অল্প কিছু উদ্যোক্তাই এদিকে এগিয়ে এসেছে। বাংলাদেশে হোম টেক্সটাইলের অন্যতম নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান নোমান গ্রুপের জাবের অ্যান্ড জুবায়ের ফেব্রিক্স। বাংলাদেশে হোম টেক্সটাইলের উৎপাদন ও রপ্তানিতে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাদের মধ্যে আরও আছে অলটেক্স, এসিএস টেক্সটাইল, সাদ মুসা, রিজেন্ট, জেকে গ্রুপ,ক্ল্যাসিক্যাল হোম, শান ফেব্রিকস ইত্যাদি। চাহিদা মেটাতে এরাও দীর্ঘমেয়াদি বিবেচনায় বিভিন্নভাবে উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে।
পোশাক খাতের ওপর ব্যাপকভিত্তিক কাজ করে থাকে, এমন একটি প্রতিষ্ঠান হলো অ্যাপারেল অনলাইন। এটি মূলত ওয়েবভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। অ্যাপারেল অনলাইনে গত বছর বাংলাদেশের হোম টেক্সটাইলের কয়েকটি বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মতামত প্রকাশ করা হয়। তাঁদের সেই মতামত থেকেই বাংলাদেশি হোম টেক্সটাইলের শক্তি ও দুর্বলতার বিষয়টি বহুলাংশে স্পষ্ট হয়।
নেদারল্যান্ডভিত্তিক আইকিয়ার দক্ষিণ এশীয় ব্যবসার পরিচালন ব্যবস্থাপক সুসানে বার্গস্ট্যান্ড এর মতে, পণ্য প্রস্তুত থাকলেও অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে বাংলাদেশ থেকে সময়মতো পণ্য জাহাজীকরণ একটি বড় সমস্যা। আর এটিই দেশটির এই ব্যবসা সম্প্রসারণে একটি বড় বাধা। সুসানে অবশ্য এ-ও বলেন যে তাঁরা বাংলাদেশ থেকে হোম টেক্সটাইলের বিভিন্ন সামগ্রী নিচ্ছেন এ জন্য যে দামে এগুলো বেশ প্রতিযোগিতামূলক। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ থেকে কিচেন টেক্সটাইল, বেডশিট, তোয়ালে ও তোশক কিনছি।’
অবশ্য ক্যারিফোর ইন্ডিয়ার আবাসিক ব্যবস্থাপক ম্যাথিউ ব্রুসে বলেন, ‘অবকাঠামোজনিত কারণে বাংলাদেশে উৎপাদন-সক্ষমতা একটা বড় সমস্যা হলেও সেখানে যেভাবে বিনিয়োগ হচ্ছে, তাতে মনে হয় তারা এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।’
জরলু লিনেনের পারচেজিং চিফ রোহিত চান্দা মনে করেন, কোনো সন্দেহ নেই,বাংলাদেশের হোম টেক্সটাইলের বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে। বাংলাদেশে হোম টেক্সটাইলের কারখানা প্রচুর নয়। তবে যেগুলো আছে এবং সামনে যেগুলো আসবে,সেগুলো সবই ভালো ব্যবসা করছে ও করবে।
অন্যদিকে রেড ক্যাটস এশিয়ার আবাসিক ব্যবস্থাপক বিক্রম ধাওয়ানের মতে,সীমিত সামর্থ্য নিয়ে বাংলাদেশ প্রচুর কার্যাদেশ গ্রহণ করতে সক্ষম হবে না। ফলে,আমেরিকার বাজার ধরা হয়তো কঠিন হবে।
মোটা দাগে এসব আন্তর্জাতিক ক্রেতা তুলনামূলক কম দামি হোম টেক্সটাইলের সামগ্রী অধিক হারে বাংলাদেশ থেকে কিনে থাকে। তারা মনে করে, বাংলাদেশ এখন গুণগত মানের উচ্চ স্তরে পৌঁছাতে সময় লাগবে।
অ্যাপারেল অনলাইনে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের কিছু ভাবনাও তুলে ধরা হয়েছিল। সেখানে তারা বলেছিল যে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বড় বিনিয়োগ প্রয়োজন, যা তারা করতে প্রস্তুত। তারা আরও বলেছিল যে বাংলাদেশি প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকেরা প্রধানত নিবিড় বা মৌলিক সামগ্রীর দিকেই বেশি জোর দেয়।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা আরও মনে করে, বিশ্বজুড়ে ক্রেতা-ভোক্তাদের ৬০ শতাংশই সৃজনশীল ও উচ্চ মূল্য সংযোজনের দিকে ঝুঁকে থাকে। আর বাকি ৪০ শতাংশ মৌলিক পণ্যেই আগ্রহী। বাংলাদেশ যেমন মৌলিক পণ্যে ভালো করছে, তেমনি উচ্চ মানের পণ্যেও ইতিমধ্যে খ্যাতি অর্জন করেছে।
এ প্রসঙ্গে সাদ মুসা গ্রুপের পরিকল্পনা ও বিপনন নির্বাহী পরিচালক শেখ হাসান জামান বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশি হোম টেক্সটাইলের গুণগত মান যথেষ্ট ভালো। বিদেশি ক্রেতাদের কাছে এই মান গ্রহণযোগ্য হওয়াতেই তারা বাংলাদেশ থেকে বেশি করে পণ্য নিচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, ২০১১-১২ অর্থবছরেই বাংলাদেশ থেকে হোম টেক্সটাইল রপ্তানি ১০০ কোটি ডলার অতিক্রম করে যেতে পারে। এখানকার বড় কারখানাগুলো সেভাবেই পণ্য উৎপাদন করছে।
বর্তমানে হোম টেক্সটাইলশিল্পে প্রধান সমস্যা কী, জানতে চাইলে হাসান জামান বলেন, তুলার দাম ও জোগানই সবচেয়ে বড় সমস্যা। চীন, ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে এখানেই। এরা নিজেরাই ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ উৎপাদন খরচ সহজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নিজস্ব তুলার জোগান থাকার কারণে। আর বাংলাদেশকে নির্ভর করতে হয় বিশ্ববাজারের দামের ওঠানামার ওপর। কেননা,বাংলাদেশের তুলার চাহিদার মাত্র ২ শতাংশ অভ্যন্তরীণ উৎপাদন থেকে মেটানো সম্ভব। বাকি ৯৮ শতাংশই আমদানি করতে হয়।
বাজার বহুমুখীকরণ প্রসঙ্গে হাসান জামান বলেন, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার বাইরে দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ আফ্রিকা হোম টেক্সটাইলের বিরাট বাজার হতে পারে। ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা এখন যা হোম টেক্সটাইল আমদানি করে, এর প্রায় পুরোটাই চীন থেকে। একই অবস্থা আফ্রিকায়। তাই এসব বাজারে বাংলাদেশের প্রবেশ করতে ও অবস্থান করে নিতে সময় লাগবে।
এখন আমরা টেক্সটাইলের কিছু বইয়ের সাথে পরিচিত হব।
দিন দিন টেক্সটাইলের দিয়ে খুব ভাল ছাত্ররা এগিয়ে যাচ্ছে এর ফলে বাংলাদেশের টেক্সটাইল সেক্টর গুলো দিন দিন বাহির দেশের সাথে সমান পাল্লায় চলতে পারছে।
অভিনন্দন রইল টেক্সটাইলে সকল ভাই ও বোনদের প্রতি।
তাদের জন্য কিছু টেক্সটাইল বইয়ের নাম ও ডাউনলোড লিঙ্ক
YMT,FMT,WPT,GMT এর বই download করতে এখানে ক্লিক করেন
YMT=yarn manufacturing technology
FMT=fabric manufacturing technology
WPT= wet processing technology
GMT=garments manufacturing technology
Fabric এর জন্যে এই lecture গুলো দেখতে পারেন এখানে
WPT এর জন্যে একটা boss blog দিচ্ছি,এটাই যথেষ্ট ।
ব্লগটির লিঙ্ক এখানে
এখানে টেক্সটাইলের কিছু তত্ত্ব পাবেন যা কাজে আসতে পারে
যারা journal পড়তে ভালবাসেন তাদের নিউজ এখানে
আরেকটি মজার ও কাজের সাইট দেখতে পারেন এখানে
এক জীবনে SPINNING এ যা যা লাগে সব আছে এর মধ্যে
No comments:
Post a Comment