মতিন চিন্তার গভীর সমুদ্রে সমানে হাবুডুবু খাচ্ছে। এ গভীর সমুদ্রটা যদি
বাস্তবের হতো, তবে তাকে হাবুডুবু খেতে হতো না। কারণ, সে সাঁতারে মোটামুটি
দক্ষ। ঘটনা হল, দু’দিন পরে মতিনের বিয়ে। কিন্তু তার সব থেকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু
আজাদের কোন পাত্তা নেই। বিড়াল আনার নাম করে সেই যে গা-ঢাকা দিয়েছে, তারপর
কোথায় বিড়াল, কোথায় আজাদ! দুটোই ডুমুরের ফুল হয়ে আছে। বিয়ের সঙ্গে
বিড়াল কেন? আরে বাপু, এটাই তো আসল বিষয়!
মতিনের বিয়ের খবর শুনে বিস্মিত কণ্ঠে আজাদ বলেছিল,
-তাহলে মতিন শেষ পর্যন্ত তুই-ও বাঘের খাঁচায় পা ঢোকানোর ইচ্ছা করেছিস? দু’দিন পরই তুই হয়ে যাবি বাঘের খাঁচার বন্দি, মানে বাঘ বন্দি! ওফ বিষয়টাকে আর কিছুতেই ভাবা যাচ্ছে না!
পা ঢোকানোর কথা শুনে মতিন ওর পা দুটোকে সড়াৎ করে টেনে নিয়ে দু-হাত পিছিয়ে গিয়ে বলল, কি যা-তা শোনাচ্ছিস! বাঘের খাঁচায় ঢুকে বাঘের পেটে যেতে যাব কোন দুঃখে! ইয়েঃ তিন দিন পর তো আসলে বিয়ে করতে যাচ্ছি!
‘আরে সে কথাই তো বলছিলাম!’ চোখ পাকিয়ে বলল আজাদ। ‘ভালোই ছিলি একলা একলা, আড্ডায় এসে চা-বিস্কুটের বিল-টিল দিতি, মাগনা মাগনা সিনেমা দেখাতি, এই অসময়ে আবার বিয়ের গ্যাঞ্জামে যেতে যাচ্ছিস কেন হে?’
-চিন্তা করিস না,বিয়ের পরও চা-বিস্কুটের দাম আর সিনেমার বিল আমার পকেট থেকেই বেরুবে! আজাদকে আশ্বস্ত করে মতিন বলল।
মতিনের কথা শুনে নিজের নাকটাকে টেনে ‘ছোক’ জাতীয় একটা শব্দ করে আজাদ বলল, হুহ! সে যে কেমন বেরুবে আমি ভালো মতনই জানি। বিয়ের পর ঘর থেকে তুই নিজেই বেরুতে পারিস কি-না সেটাই এখন বড় বিষয়, আর উনি বলছেন,পকেট থেকেঃ থাক থাক! ওসব গলাবাজি করে লাভ নেই,ফাঁসির দড়িই যখন গলায় পড়তে যাচ্ছ, বন্ধু হিসেবে যেচে পড়ে সামান্য একটা উপকার করার মতলব করে নিই। বলি, বিড়াল-টিড়াল কি কিছু ম্যানেজ হয়েছে?
মতিন বিস্ময় নিয়ে জিজ্ঞেস করল, বিয়ের মাঝখানে বিড়াল আবার কেন? বিয়েটা আমার, বিড়ালের তো নয় যে তাকে ম্যানেজ করে কিংবা নিমন্ত্রণ দিয়ে আনতে হবে?
-আরে বেকুব বিড়ালকে নিমন্ত্রণ করতে যাবি কোন দুঃখে? কিন্তু বিয়ের সঙ্গে বিড়ালও যে দারুণ ইম্পর্টেন্ট একটা জিনিষ হে। বিড়াল বিষয়ে গুরুজনরা কি বলে জানিস?
মতিন মাথা নাড়ালো,জানি না।
-তবে শোন, বিড়াল হল এ সংসারের সব থেকে উপকারী গৃহপালিত প্রাণী। প্রাণীটাকে তুই যতই অবহেলার চোখে দেখিস না ক্যান, বাসর রাতেই যদি বিড়াল বাবাজিকে কব্জা করতে না পারিস, আই মিন, না মারতে পারিস তবে তোর কপালে নির্ঘাত দুঃখ আছে। সারাজীবন তোকেই বউয়ের কব্জায় থেকে বিড়ালের মতো মিউ মিউ করে ডাকতে হবে, বাঘের মতো গররর..গরর..ডাকতে ঘুণাক্ষরেও পারবি না, বুঝলি?
মতিন বলল, বুঝলাম। তবে বিড়াল-টিড়াল আমি ম্যানেজ করতে পারব না বাপু। বিড়াল মারার প্রেসক্রিপশন দিয়েছিস তুই, এখন তোকেই ম্যানেজ করতে হবে।
আজাদ গোস্বা হয়ে বলল, উ.. দেখ দেখি কাণ্ড। রোগ হয়েছে উনার আর ওষুধ কি-না আমাকে খেতে হবে! ঠিক আছে, মরগে তুই বিড়াল ছাড়া বাসর রাতে ঢুকে, আমি গেলাম!
আজাদ গা-ঢাকা দিল। তবে মতিন নিশ্চিত, কাছের বন্ধু হিসেবে আর যাই হোক, দু’চারটে বিড়াল, লাগলে কয়েক ডজন খানেক বিড়ালও আজাদ অনায়াসেই মতিনকে ম্যানেজ করে দিতে পারবে।
মতিনের বিয়ের আগের দিনই ইয়া তাগড়া জোয়ান টাইপের চারটে নাদুস-নুদুস বিড়াল এনে হাজির আজাদ।
দেখ, একেবারে চার চারটে বাঘের বাচ্চা এনে হাজির করেছি তোর জন্য। এখন ভালোয় ভালোয় বাড়ি নিয়ে গিয়ে এগুলোর অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের সুব্যবস্থা কর। কাল রাত্রে চারটেরই একটা সু-ব্যবস্থা করে দিতে পারলে তোর লাইফ নিয়ে আর কিচ্ছুই ভাবনা করতে হবে না রে..
তারপর দিন ভালোয় ভালোয় মতিনের বিয়েটা হয়ে গেল। বিড়াল চারটেও সারাটা দিন দানাপানিহীন বন্দি একটা অন্ধকার ঘরে মিউ মিউ করেই কাটিয়ে দিল। রাত হলে বাসর ঘরে ঢুকতে যাবে মতিন, এমন সময় আজাদ হৈ হৈ করতে করতে তেড়ে এল, তুইতো দেখছি লাইফটাকে নষ্ট করতে চলেছিস রে বেকুব?
মাথার পাগড়ি খুলে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল মতিন, মানে?
বলি বিড়াল কই?
কেন গুদাম ঘরের অন্ধকারে আটকে রেখে দিয়েছি!
আজাদ খাপ্পা হয়ে উঠলো। ‘করেছিস কি রে বেকুব, রাত্রিবেলা বউকে ছেড়ে উঠে এসে তুই কি গুদাম ঘরে গিয়ে বিড়াল মারবি নাকি?
বিড়াল ব্যাপারটাকে মতিনের আর একটুও ভালো লাগছিল না। সে বলল, দোস্ত, আসলে অমন অবলা চারটে জীবকে কি না মারলে হতো না?
আজাদ ঠোঁট উল্টে বললো,উহু! আমি তোকে কিছুতেই অসুখী দেখতে চাই না। ঠিক আছে। একটা বাক্সে ভরে চারটে বিড়ালকেই তোর ঘরে পাঠিয়ে দিচ্ছি, রাত্রিবেলা মনে করে মারিস কিন্তু!
বিড়াল চারটে একটা বড়সড় বাক্সের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হল মতিনের ঘরে। মতিনের সদ্য বিবাহিত বউ এই কাণ্ডকীর্তি দেখেই আঁতকে উঠল ঘোমটা ফেলে!
বাক্সটা নামিয়ে মতিন কাচুমাচু মুখ করে বউকে বলল,আসলে ঘরে ইঁদুরের ভারি উৎপাত। অনেক ধেড়ে ধেড়ে ইঁদুর আছে এই ঘরে। ওসব দেখে তুমি আবার শেষকালে যাতে ভয় না পাও সে জন্যেইঃ
তারপর রাত কেটে গিয়ে দিনের আলোয় দুনিয়া ফর্সা হল। মতিনেরও খোশমেজাজ নিয়ে আজাদের সঙ্গে দেখা হল।
দোস্ত, বিড়াল মেরেছিলি তো?
উহু! বিড়াল মারিনি, বরং বিড়ালই মারছিল!
অবাক হয়ে জানতে চাইল আজাদ, বলিস কি? বিড়ালের তো কাউকে মারার কথা না। কোথায় মেরেছে দেখি?
ঘরে! মুচকি হেসে বলল মতিন।
মানে? আজাদ বিস্মিত হল।
মতিন বলল, মানে হল, বিড়াল চারটেকেই রাত্রে বাক্স ছেড়ে অবমুক্ত করা হয়েছিল। চারটেই মনের সুখে বাড়ির ইঁদুরগুলোর ঘুম হারাম করেছে। আর ওদের কারণেই আমরা মনের আনন্দে ঘুমিয়েছি, বুঝলি!
খানিকক্ষণ মাথা চুলকে আজাদ বলল, নাহ! দোস্ত। তোকে আর বাঁচাতে পারলাম না রে। বাসর রাতে হাতের কাছে জলজ্যান্ত চার-চারটে অমন তাগড়া জোয়ান বিড়াল থাকতেও মারতে পারিসনি, নির্ঘাত জীবনে তুই আর সুখ পাবি না। নির্ঘাত তুই তোর বউয়ের কব্জায় আটকে গেলি, আক আহা..
আজাদ ‘আহা’ বললেও মতিন অবশ্য সত্যি সত্যিই তার বউয়ের কব্জায় আটকে যায়নি। চার-চারটে অবলা বিড়াল না মারার কারণেই কি-না কে জানে, নতুন বউ নিয়ে মতিন এখন দারুণ হ্যাপি। হ্যাপি বিড়ালগুলোও। একদিক দিয়ে বরং বিড়ালরাই বেশি হ্যাপি। কারণ, এ বাড়িতে এসে ওদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ক’দিন আগেই মতিনের বিড়ালগুলো ডজন খানেক বাচ্চা দিয়েছে!
মতিনের বিয়ের খবর শুনে বিস্মিত কণ্ঠে আজাদ বলেছিল,
-তাহলে মতিন শেষ পর্যন্ত তুই-ও বাঘের খাঁচায় পা ঢোকানোর ইচ্ছা করেছিস? দু’দিন পরই তুই হয়ে যাবি বাঘের খাঁচার বন্দি, মানে বাঘ বন্দি! ওফ বিষয়টাকে আর কিছুতেই ভাবা যাচ্ছে না!
পা ঢোকানোর কথা শুনে মতিন ওর পা দুটোকে সড়াৎ করে টেনে নিয়ে দু-হাত পিছিয়ে গিয়ে বলল, কি যা-তা শোনাচ্ছিস! বাঘের খাঁচায় ঢুকে বাঘের পেটে যেতে যাব কোন দুঃখে! ইয়েঃ তিন দিন পর তো আসলে বিয়ে করতে যাচ্ছি!
‘আরে সে কথাই তো বলছিলাম!’ চোখ পাকিয়ে বলল আজাদ। ‘ভালোই ছিলি একলা একলা, আড্ডায় এসে চা-বিস্কুটের বিল-টিল দিতি, মাগনা মাগনা সিনেমা দেখাতি, এই অসময়ে আবার বিয়ের গ্যাঞ্জামে যেতে যাচ্ছিস কেন হে?’
-চিন্তা করিস না,বিয়ের পরও চা-বিস্কুটের দাম আর সিনেমার বিল আমার পকেট থেকেই বেরুবে! আজাদকে আশ্বস্ত করে মতিন বলল।
মতিনের কথা শুনে নিজের নাকটাকে টেনে ‘ছোক’ জাতীয় একটা শব্দ করে আজাদ বলল, হুহ! সে যে কেমন বেরুবে আমি ভালো মতনই জানি। বিয়ের পর ঘর থেকে তুই নিজেই বেরুতে পারিস কি-না সেটাই এখন বড় বিষয়, আর উনি বলছেন,পকেট থেকেঃ থাক থাক! ওসব গলাবাজি করে লাভ নেই,ফাঁসির দড়িই যখন গলায় পড়তে যাচ্ছ, বন্ধু হিসেবে যেচে পড়ে সামান্য একটা উপকার করার মতলব করে নিই। বলি, বিড়াল-টিড়াল কি কিছু ম্যানেজ হয়েছে?
মতিন বিস্ময় নিয়ে জিজ্ঞেস করল, বিয়ের মাঝখানে বিড়াল আবার কেন? বিয়েটা আমার, বিড়ালের তো নয় যে তাকে ম্যানেজ করে কিংবা নিমন্ত্রণ দিয়ে আনতে হবে?
-আরে বেকুব বিড়ালকে নিমন্ত্রণ করতে যাবি কোন দুঃখে? কিন্তু বিয়ের সঙ্গে বিড়ালও যে দারুণ ইম্পর্টেন্ট একটা জিনিষ হে। বিড়াল বিষয়ে গুরুজনরা কি বলে জানিস?
মতিন মাথা নাড়ালো,জানি না।
-তবে শোন, বিড়াল হল এ সংসারের সব থেকে উপকারী গৃহপালিত প্রাণী। প্রাণীটাকে তুই যতই অবহেলার চোখে দেখিস না ক্যান, বাসর রাতেই যদি বিড়াল বাবাজিকে কব্জা করতে না পারিস, আই মিন, না মারতে পারিস তবে তোর কপালে নির্ঘাত দুঃখ আছে। সারাজীবন তোকেই বউয়ের কব্জায় থেকে বিড়ালের মতো মিউ মিউ করে ডাকতে হবে, বাঘের মতো গররর..গরর..ডাকতে ঘুণাক্ষরেও পারবি না, বুঝলি?
মতিন বলল, বুঝলাম। তবে বিড়াল-টিড়াল আমি ম্যানেজ করতে পারব না বাপু। বিড়াল মারার প্রেসক্রিপশন দিয়েছিস তুই, এখন তোকেই ম্যানেজ করতে হবে।
আজাদ গোস্বা হয়ে বলল, উ.. দেখ দেখি কাণ্ড। রোগ হয়েছে উনার আর ওষুধ কি-না আমাকে খেতে হবে! ঠিক আছে, মরগে তুই বিড়াল ছাড়া বাসর রাতে ঢুকে, আমি গেলাম!
আজাদ গা-ঢাকা দিল। তবে মতিন নিশ্চিত, কাছের বন্ধু হিসেবে আর যাই হোক, দু’চারটে বিড়াল, লাগলে কয়েক ডজন খানেক বিড়ালও আজাদ অনায়াসেই মতিনকে ম্যানেজ করে দিতে পারবে।
মতিনের বিয়ের আগের দিনই ইয়া তাগড়া জোয়ান টাইপের চারটে নাদুস-নুদুস বিড়াল এনে হাজির আজাদ।
দেখ, একেবারে চার চারটে বাঘের বাচ্চা এনে হাজির করেছি তোর জন্য। এখন ভালোয় ভালোয় বাড়ি নিয়ে গিয়ে এগুলোর অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের সুব্যবস্থা কর। কাল রাত্রে চারটেরই একটা সু-ব্যবস্থা করে দিতে পারলে তোর লাইফ নিয়ে আর কিচ্ছুই ভাবনা করতে হবে না রে..
তারপর দিন ভালোয় ভালোয় মতিনের বিয়েটা হয়ে গেল। বিড়াল চারটেও সারাটা দিন দানাপানিহীন বন্দি একটা অন্ধকার ঘরে মিউ মিউ করেই কাটিয়ে দিল। রাত হলে বাসর ঘরে ঢুকতে যাবে মতিন, এমন সময় আজাদ হৈ হৈ করতে করতে তেড়ে এল, তুইতো দেখছি লাইফটাকে নষ্ট করতে চলেছিস রে বেকুব?
মাথার পাগড়ি খুলে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল মতিন, মানে?
বলি বিড়াল কই?
কেন গুদাম ঘরের অন্ধকারে আটকে রেখে দিয়েছি!
আজাদ খাপ্পা হয়ে উঠলো। ‘করেছিস কি রে বেকুব, রাত্রিবেলা বউকে ছেড়ে উঠে এসে তুই কি গুদাম ঘরে গিয়ে বিড়াল মারবি নাকি?
বিড়াল ব্যাপারটাকে মতিনের আর একটুও ভালো লাগছিল না। সে বলল, দোস্ত, আসলে অমন অবলা চারটে জীবকে কি না মারলে হতো না?
আজাদ ঠোঁট উল্টে বললো,উহু! আমি তোকে কিছুতেই অসুখী দেখতে চাই না। ঠিক আছে। একটা বাক্সে ভরে চারটে বিড়ালকেই তোর ঘরে পাঠিয়ে দিচ্ছি, রাত্রিবেলা মনে করে মারিস কিন্তু!
বিড়াল চারটে একটা বড়সড় বাক্সের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হল মতিনের ঘরে। মতিনের সদ্য বিবাহিত বউ এই কাণ্ডকীর্তি দেখেই আঁতকে উঠল ঘোমটা ফেলে!
বাক্সটা নামিয়ে মতিন কাচুমাচু মুখ করে বউকে বলল,আসলে ঘরে ইঁদুরের ভারি উৎপাত। অনেক ধেড়ে ধেড়ে ইঁদুর আছে এই ঘরে। ওসব দেখে তুমি আবার শেষকালে যাতে ভয় না পাও সে জন্যেইঃ
তারপর রাত কেটে গিয়ে দিনের আলোয় দুনিয়া ফর্সা হল। মতিনেরও খোশমেজাজ নিয়ে আজাদের সঙ্গে দেখা হল।
দোস্ত, বিড়াল মেরেছিলি তো?
উহু! বিড়াল মারিনি, বরং বিড়ালই মারছিল!
অবাক হয়ে জানতে চাইল আজাদ, বলিস কি? বিড়ালের তো কাউকে মারার কথা না। কোথায় মেরেছে দেখি?
ঘরে! মুচকি হেসে বলল মতিন।
মানে? আজাদ বিস্মিত হল।
মতিন বলল, মানে হল, বিড়াল চারটেকেই রাত্রে বাক্স ছেড়ে অবমুক্ত করা হয়েছিল। চারটেই মনের সুখে বাড়ির ইঁদুরগুলোর ঘুম হারাম করেছে। আর ওদের কারণেই আমরা মনের আনন্দে ঘুমিয়েছি, বুঝলি!
খানিকক্ষণ মাথা চুলকে আজাদ বলল, নাহ! দোস্ত। তোকে আর বাঁচাতে পারলাম না রে। বাসর রাতে হাতের কাছে জলজ্যান্ত চার-চারটে অমন তাগড়া জোয়ান বিড়াল থাকতেও মারতে পারিসনি, নির্ঘাত জীবনে তুই আর সুখ পাবি না। নির্ঘাত তুই তোর বউয়ের কব্জায় আটকে গেলি, আক আহা..
আজাদ ‘আহা’ বললেও মতিন অবশ্য সত্যি সত্যিই তার বউয়ের কব্জায় আটকে যায়নি। চার-চারটে অবলা বিড়াল না মারার কারণেই কি-না কে জানে, নতুন বউ নিয়ে মতিন এখন দারুণ হ্যাপি। হ্যাপি বিড়ালগুলোও। একদিক দিয়ে বরং বিড়ালরাই বেশি হ্যাপি। কারণ, এ বাড়িতে এসে ওদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ক’দিন আগেই মতিনের বিড়ালগুলো ডজন খানেক বাচ্চা দিয়েছে!
No comments:
Post a Comment