আমাদের চারপাশে এই যে মহাবিশ্ব, সূর্য্য চন্দ্র আমি আপনি এই সব কিছু
নিয়েও কিন্তু আমাদের প্রকৃতি বা Nature. মানুষ হচ্ছে এই প্রকৃতির মাঝে
সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ জীব। মানুষ কি নিজে নিজে বাচঁতে পারে। না মানুষকে খাদ্য
গ্রহন করতে হয়, এই খাদ্য কিন্তু তার নিজের শরীর থেকে উৎপন্ন হয় না। তাই
বলা যায় মানুষ একটা পরাধীন সত্ত্বা। প্রকৃতির মাঝে এমন কোন সত্ত্বা নাই
যেটা নিজে নিজে বাচতে পারে। প্রত্যেকটা প্রানীই বেচে থাকার জন্য একজন
আরেকজনের উপর নির্ভরশীল। আবার মানুষ চাইলেই সব কিছু করতে পারে না। মানুষ
আকার আয়তনে সীমিত। সে চাইলেও মৃত্যুকে ঠেকাতে পারবে না, তাই আমরা বলেতে
পারি মানুষ হল একটা সীমাবদ্ধ ও পরাধীন সত্ত্বা। শুধু মানুষ নয় আমাদের
প্রকৃতির মাঝে এমন কোন সত্ত্বা খুজে পাবেন না যেটা Unlimited, infinite,
independent. Nature বা প্রকৃতির প্রত্যেকটা সত্ত্বাই Limited, Finite এবং
একজন আরেকজনের প্রতি Dependent. এমনকি সূর্য্য, চন্দ্র, গ্রহ নক্ষত্র
এগুলিও কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন মেনে চলে। এই মহাজাগতিক উপাদান গুলিও
অসীম নয়। আকার আয়তনে সীমিত। বলা হয় যে মহাবিশ্ব প্রতিনিয়ত প্রসারিত
হচ্ছে। মহাবিশ্বের এই প্রসারনটাও কিন্তু একটি সীমার মধ্যে হচ্ছে। মহাবিশ্ব
যদি অসীমই হত তাইলে তো আর সে প্রসারিত হত না। তাছাড়া এই মহাবিশ্ব আবার
সংকুচিত হয়ে তার পূর্বের স্বত্বাই ফিরে আসবে। তাই এই মহাবিশ্বকে আমরা
অনন্ত অসীম বলতে পারব না। এখন প্রকৃতি বলতে আমরা কি বুঝি ? প্রকৃতি কিন্তু
এই মহাবিশ্ব এই সকল প্রাণি জগত এগুলির সমষ্টি। অনেক গুলি সীমাবদ্ধ বস্তুর
সমষ্টি কিন্তু সীমাবদ্ধই হবে। ১, ২, ৩, এরকম আপনি যত সংখ্যাই যোগ করুন না
কেন এগুলির সমষ্টি কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা। কখনই অসীম কোন সংখ্যা হবে
না। যেহেতু প্রকৃতি বা Nature সব Dependent, finite এবং limited সত্ত্বার
সমষ্টি তাই প্রকৃতিও একটা dependent, finite এবং Limited সত্ত্বা। এখন
প্রকৃতি যেহেতু নিজেই একটি সীমাবদ্ধ স্বত্বা। তাই প্রকৃতির এই ক্ষমতা নেই
এই মহাবিশ্বকে টিকিয়ে রাখার বা নিজেকে সৃষ্টি করার। আমরা যদি এখন Rational
Method বা স্বাভাবিক বিচার বুদ্ধি প্রয়োগ করি তাইলে দেখব প্রকৃতিও যেহেতু
নিজেকে তৈরি করতে পারে না তাইলে এই প্রকৃতির অবশ্যই একজন সৃষ্টিকর্তা আছে।
সেই সৃষ্টিকর্তা কে অবশ্যই একটি স্বাধীন এবং অনন্ত অসীম সত্ত্বা হতে হবে।
এবং এই সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই কারো প্রতি নির্ভরশীল হবেন না। এই সৃষ্টিকর্তার
নামই হল আল্লাহ সুবহানাতায়ালা। এখন প্রশ্ন হল এই আল্লাহ সুবহানাতায়ালা কে
কে সৃষ্টি করেছেন ? এর ৩ টা উত্তর আছে। হয় আল্লাহ সুবহানাতায়ালাকে কেউ
তৈরী করেছেন বা আল্লাহ সুবহানাতায়ালা নিজে নিজেকে তৈরী করেছেন অথবা আল্লাহ
সুবহানাতায়ালা হচ্ছেন একটি অনন্ত অসীম (আজালী) সত্ত্বা। আল্লাহ
সুবহানাতায়ালা কে যদি কেউ তৈরী করে তাইলে তো আর তিনি আল্লাহই হলেন না। এখন
২য় শর্তে যদি যাই তাইলে দেখব আল্লাহ সুবহানাতায়ালা নিজে নিজেকে তৈরি
করেছেন। এটাও গ্রহনযোগ্য নয় কারন এটা করতে হলে আগে আল্লাহ
সুবহানাতায়ালাকে আগে অস্তিত্ত্বে আসতে হবে এরপর নিজে নিজেকে তৈরী করতে
হবে। আল্লাহ সুবহানাতায়ালা যদি আগে অস্তিত্ত্বেই এসেই পড়েন তাইলে আর
নিজেকে সৃষ্টি করার কি দরকার ? তাইলে ৩য় শ র্ত টাই ঠিক। আল্লাহ
সুবহানাতায়ালা হচ্ছেন একটি আজালী বা অনন্ত অসীম সত্ত্বা। আল-কোরআনের সূরা
ইখলাসে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা নিজের সম্পর্কে যা বলেছেন এটাই মানতে হবে যে
উনাকে কেঊ সৃষ্টি করেনি আর উনিও কাউকে জন্ম দেন নি উনি হলেন একটি আজালী বা
অনন্ত অসীম সত্ত্বা। কিন্তু মানুষ হচ্ছে একটি সসীম সত্ত্বা। একটি সসীম
সত্ত্বা কখনই একটি অনন্ত অসীম সত্ত্বাকে বুঝতে পারবে না। তাই মানুষ কখনই
আল্লাহ সুবহানাতায়ালার সিফাত বা গুনকে পুরাপুরি বুঝতে পারবে না।
আল-কোরআনে এবং সহীহ হাদীসে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা নিজের সম্পর্কে যতটুকু
বলেছেন ততটুকুর উপর আমাদের সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
[ তথ্যসূত্রঃ আমি এই নোটটি লেখার ক্ষেত্রে মুসলিম বিশ্বের প্রবাদ পুরুষ ফিলিস্তিনের শায়খ তাকিউদ্দিন আন নাবাহানীর লেখা বই The System of islam এর সাহায্য নিয়েছি। ]
[ তথ্যসূত্রঃ আমি এই নোটটি লেখার ক্ষেত্রে মুসলিম বিশ্বের প্রবাদ পুরুষ ফিলিস্তিনের শায়খ তাকিউদ্দিন আন নাবাহানীর লেখা বই The System of islam এর সাহায্য নিয়েছি। ]
No comments:
Post a Comment