
বিয়ে যেকোন মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।কিন্তু যে সিদ্ধান্তটি দুজন মানুষের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়, সেই সিদ্ধান্তটি অনেক সময়ে বাস্তবতাকে গৌণ করে প্রাধাণ্য দেয়া হয় আবেগকে। এই কারনে অনেক সম্পর্কই পরবর্তীতে অসফল হতে দেখা যায় যা কারই কাম্য নয়।
এ সম্পর্কে “অল-ইন-ওয়ান মেরেজ প্রেপ” বইএর রচয়িতা এবং সম্পর্ক প্রশিক্ষক সুজেন আলেকজান্ডার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে বলেন, বিবাহ প্রস্তাবের পূর্বেই তারা দুজন মিলে সে সকল বিষয় লিপিবদ্ধ করে নিয়েছিল যা তারা নিজেদের সম্পর্কের মাঝে দেখতে চান ।যাতে নিজেদের সম্পর্ক থেকে দুজনের প্রত্যাশার কোন অমিল না থাকে।
বিয়ের নিয়ে দেখা স্বপ্নগুলো যেন অকালেই ঝরে না যায়,তাই বিবাহ প্রস্তাবের পুর্বেই কিছু বিষয় বিবেচনা করে নেয়া জরুরী
নিজেকে এবং সঙ্গীকে জেনে নেয়া
ভালবাসা অন্ধ।কিন্তু এই অন্ধত্ব এতটাও হওয়া উচিত না যা এমন একজন মানুষের সাথে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করবে যার সাথে মানসিকতার পার্থক্য অনেক।
এ সম্পর্কে লেখিকা এবং মনোবিজ্ঞানী কেরোল ওয়ার্ড বলেন,এ ধরনের বড় সিদ্ধান্তে নিজের সাথে সৎ থেকে কিছু জিনিষ বিবেচনা করে নেয়া ভাল। যেমনঃ আপনি নিজের দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক হতে কি চান,কিংবা আপনার সঙ্গী কি আপনার চেয়ে বেশি একাকীত্ব পছন্দ করে,বা ঠিক কতটুকু পরিমাণ মানসিক অমিল আপনি মেনে নিতে পারবেন।
প্রয়োজনে একান্তে বসুন এবং এমন পাঁচটি বিষয় খুঁজে বের করুন যা আপনি আপনার সম্পর্কের মাঝে দেখতে চান।পদক্ষেপটি আপাতদৃষ্টিতে শুষ্ক মনে হলেও এটি আপনার সিদ্ধান্তকেই সুদৃড় করবে।
এছাড়াও দুজনের নীতিগত গুণগুলোও বিবেচনায় আনতে হবে।দুজনের বিভিন্ন পরিবেশে একসাথে সময় কাটাতে হবে যাতে কিনা বোঝা যাবে তারা জীবনের বিভিন্ন চরাই উতরাইও ভালভাবে পার করতে পারবেন।
দাম্পত্যজীবন নিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা
একসাথে জীবন শুরু করার পুর্বেই বিবাহ পরবর্তী জীবন নিয়ে একটু আলোচনা করে নিন।এই আলচনায় সব কিছুই অন্তর্ভূক্ত থাকবে।যেমনঃ থাকার ব্যবস্থা, ছেলেমেয়ে পরিকল্পনা,আর্থিক ব্যবস্থা,পেশাগত দিক,ধর্মীয় চিন্তা ভাবনা ইত্যাদি।এসব বিষয়বস্তু ভবিষ্যতে নানা দ্বন্দ্ব হতে মুক্তি দিতে পারে। রুচির অমিলও মাঝেমাঝে অনেক বড় সমস্যায় রুপ নিতে পারে।তাই একজনের পছন্দ ও অপছন্দ আগেই জেনে নেয়া ভাল ।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় হল নিজেদের ঝগড়া মিটানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে আগেই কথা বলে নেয়া।যাতে ভবিষ্যতের অযাচিত ঘটনাগুল মোকাবিলা করা যায়।
বিবাহের জন্য মানসিক প্রস্তুতি
এটা হতে পারে আপনি হয়ত বিয়ের জন্য তৈরি কিন্তু আপনার সঙ্গীটি এখন তৈরি নয়।জোর করে কোন সম্পর্ক তৈরি করবেন না যা কারো মনের উপর চাপ সৃষ্টি করে।
যদি আপনার সঙ্গী আপনার চাইতে বন্ধুদের সাথে সময় বেশি দিতে পছন্দ করে বা কিভাবে সময় কাটাচ্ছে তা আপনাকে জানাতে আগ্রহী না হয়,অথবা ভবিষ্যত পরিকল্পনায় উৎসাহ না দেখায় তাহলে বুঝে নিতে হবে তিনি মানসিকভাবে প্রস্তুত নন কোন দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্কের জন্য।
তবে এর মানে এই নয় সম্পর্কই শেষ হয়ে গেল। মাঝেমাঝে অসফল বিয়ের আতঙ্কর জন্য এমন তাহতে পারে।এমন অবস্থায় আরেকটু সময় নিন এবং আপনার সঙ্গীর আপ্নাদের সম্পর্কের উপর বিশ্বাস আসতে দিন।
অনেক দম্পতি সুখী জীবনের স্বপ্ন দেখলেও,বাস্তবতা,পরিকল্পনা,মানসিক সামঞ্জস্যতা,এবং বিবাহের জন্য মানসিকভাবে তৈরি কিনা এ সকল বিষয় ও একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
No comments:
Post a Comment