আমরা যারা কম্পিউটার ইউজার তারা ভাইরাস এর নাম শুনিনি এমন একজন কেও খুজে পাওয়া খুব মুশকিল। তাই একটুকু জানার চেষ্টা করতে তো কোন দোষ নেই এই ভাইরাস কী আর তা কীভাবে কাজ করে।
ভাইরাস কী?
আর সাধারন দশটি প্রোগ্রামের মত ভাইরাস ও একটি প্রোগ্রাম। ইতিমধ্যে আমাদের টেকটিউনস এর অনেক টিউনার গন আমাদের ভাইরাস এর বিভিন্ন কোডিং প্রদান করেছেন। আমরা যারা একটু কম বুঝি তারা শুধু স্টেপ গুলো ফলো করেছি। আর যাদের প্রোগ্রমিং এর একটু ধারনা আছে তারাতো তা নিয়ে রিতিমত গবেষনা করে তার আপডেট করেছে।
ভাইরাস কিন্তু খুব ভাল প্রোগ্রামার কর্তৃক তৈরী হয়ে থাকে। কিছু কিছু ভাইরাস আছে যা একের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য তৈরী হয় কিন্তু তা আবার অন্যকে ভোগায়। যেমন আপনি একটি প্রোগ্রাম তৈরী করলেন যার কাজ হল আপনার কম্পিউটার এর USB Storage কে ৩০মিনিট পর পর ব্লক করে দেয়া যা আপনার সিকিউরিটির জন্য প্রয়োজন। কিন্তু তা আমার জন্য এক ধরনের সমস্যা কারন আমাকে সার্বক্ষনিক কাজের সময় USB Storage এ ডাটা ব্যাকআপ রাখতে হয়। সাধারন দৃষ্টিতে এই জিনিষটি না জানার কারনে আপনার কাছে তা ভাইরাস মনে হতে পারে। কিন্তু এটি কিন্তু একজন প্রোগ্রামার এর চিন্তাশক্তির ফসল।
কিন্তু ভাইরাস প্রোগ্রমের কোডিং এমন ভাবে করা হয় যতে আমাদের উইন্ডোজ এর বিভিন্ন ফাইল এর সাথে লিংক হয়ে যায়। যার দ্বারা আমাদের নজরের বাইরে সে তার কাজ করে থকে।
আমার জানা মতে প্রথম ভাইরাসটি তৈরী হয়ে ছিল শুধুমাত্র মজা করার জন্য এবং কৌতুহল মেটানোর জন্য, আর সেটি হল একটি ফ্লপি কে একটি নির্দিষ্ট বার কপি করার পর (সম্ভবত ২০ বার) সে একটি মেসেজ দেখাতো। কিন্তু সেটি ছিল ডিস্ক অপারেটিং সিস্টমের আমলে। আমরা এখন গ্রাফিকাল ইউজার ইন্টারফেজ এর যুগে বসবাস করি, তাই আমাদের আমলের ভাইরাস অনেক কমপ্লেক্স।
ভাইরাস প্রোগ্রামে কী কী থাকে?
Repliction Engine : এর মাধ্যমে একটি অনুলিপি (Copy) তৈরী করে এবং অন্যান্য ফাইলে তা ছড়িয়ে দেয়।
Protection : এর মাধ্যমে একটি ভাইরাস তার কোডিং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ফাইল এর কোডিং এর মাঝে লুকিয়ে রাখে।
Trigger : একটি ঘটনা বা সময় যার জন্য ভাইরাস ফাইলটি অপেক্ষা করতে থাকে। ঘটনা ঘটলে বা ঐ সময় এ পৌছলে সে নিজেকে একটিভ্যাট করে তোলে। এই সময়কে ভাইরাস কম্পউটার এর সিস্টেম এর ক্লক এর মাধ্যমে বুঝতে পারে, যেমন – সকাল ১০.৫০মিনিট অথবা একটি প্রোগ্রম চালু করার ১৫ মিনিট সময় অতিবাহিত হবার পরে। আবার এমন ও হতে পারে যেমন ব্যবহার কারী উইন্ডোজ মিডিয়া প্লেয়ার দ্বারা wav ফরমেটের কোন অডিও চালালে ব্যাগগ্রউন্ডে ঐ প্রোগ্রাম চালাও -এমন।
Payload : এটি হল ভাইরাস চালানোর পরের অংশ। অর্থাৎ সে তার কাজ সম্পন্ন করার পর যা ঘটে থাকে। যেমন – একটি প্রোগ্রম রান করানোর কিছুক্ষন পর দেখা গেল আপনার ডেক্সটপে টুলটিপ এর বক্সে লেখা ভাসছে “Hacker’s Day, Countdown 1Day 15Hour” এরকম কিছু।
আজ এই পর্যন্তই। আশাকরি পরবর্তী সময় আপনাদের সাথে আমার ভাল সময় কাটবে।
আবার ও বলে রাখি আমি কম্পউটার এর টেকনোলজির সবজান্তা নই। আমি মানুষ, আমার ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমার ও অজ্ঞানতা রয়েছে।
তাই আমার ভুল গুলো যদি আপনারা ধরিয়ে না দেন তবে আমার ও যেমন অপূর্ণতা থেকে যাবে, তেমনি যারা এই টিউনটি পরবে তাদের ও জ্ঞান পিপাসা থেকে যাবে।
তাই আপনাদের আহোরিত জ্ঞান টুকু আমাদের সকলের সাথে সেয়ার করুন। এতে করে আপনিও জানতে পারবেন, আমাদের ও উপহার দিতে পারবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ।
Thursday, January 27, 2011
এলসিডি না এলইডি (সুবিধা অসুবিধা জেনে নিন এবং কিনুন)
LCD এর পুরো নাম Liquid Crystal Display আর LED এর পুরো নাম হলো Light Emitting Diode, মোটামুটি সবাই এইটুকু জানি। পাঠকের কৌতুহল ও জানার প্রয়োজনীয়তাকে বিবেচনায় রেখে এবার LCD ও LED গল্পের কিছুটা ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করবো যাতে সাধারন জ্ঞানের পাশাপাশি এই দুই প্রযুক্তিতে পাঠকের একটু বিশেষ ধারনার জন্ম দেয়া যায়। সংগত কারনেই আলোচনায় বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক একক, সংকেত ইত্যাদির অবতারনা বাঞ্চনীয়, পাঠকের মধ্যে যারা বিজ্ঞানের ছাত্র তারা খুব সহজেই সব বুঝে ফেলবেন সন্দেহ নেই। পাশাপাশি বিজ্ঞানের ছাত্র নন এমন পাঠকের বোধগম্য করে উপস্থাপন করা হয়েছে পুরো ব্যাপারটি।
LCD, LED এর বয়োজ্যোষ্ঠ। তাই শুরুতেই LCD কে আলোচনায় নিয়ে আশাটা যুক্তিযুক্ত।
LCD ডিসপ্লে
LCD ডিসপ্লেতে প্রতিটি পিক্সেল তিনটি সাবপিক্সেলে বিভক্ত যাদের একটি লাল, একটি সবুজ এবং অবশিষ্টটি নীল রং বিশিষ্ট। এদের একটি অপরটির সাথে বিভিন্ন ফিল্টার দ্বারা যুক্ত থাকে। যেমন পিগমেন্ট ফিল্টার, ডাই ফিল্টার এবং মেটাল অক্সাইড ফিল্টার। প্রতিটি সাবপিক্সেলের বর্ণ বিভিন্ন মাত্রায় পরিবর্তন করে পিক্সেলকে লাকখানেক রং প্রদান করা যায়। এভাবে প্রতি মিলিসেকেন্ডে বারবার রং পরিবর্তনের মাধ্যমে মনুষ্য জীবনকে রাঙিয়ে তুলছে LCD ডিসপ্লে।
LCD প্রযুক্তির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
গোড়া থেকে আজ অবধি LCD’র ইতিহাস জানার জন্য পাঠককে নিয়ে যাচ্ছি ১৮৮৮ সালে। যেখানে গাজর নিয়ে গবেষনা হচ্ছিল, গবেষকের নাম ফ্রিডরিক রেইনিটজার (১৮৫৮-১৯২৭)।
১৮৮৮: গাজর থেকে সংগৃহিত কোলেস্টেরল এর “লিকুইড ক্রিস্টালাইন বৈশিষ্ট্য” আবিষ্কার করেন ফ্রিডরিক রেইনিটজার এবং ১৮৮৮ সালের ৩রা মে তারিখে তিনি ভিয়েনা ক্যামিক্যেল সোসাইটির একটি মিটিংএ তাঁর গবেষনালব্ধ ফলাফল প্রকাশ করেন।
১৯০৪: “ফ্লুসিগি ক্রিস্টাল” (লিকুইড ক্রিস্টাল) নামে অট্টো লেহম্যান্ন এর গবেষনা লব্ধ ফলাফল প্রকাশিত হয়।
১৯১১: প্রথমবারের মতো লিকুইড ক্রিস্টালকে পাতলা লেয়ারের মধ্যে বন্দি করতে সমর্থ্য হন চার্লস ম্যাগুইন।
১৯২২: জর্জেস ফ্রিডেল লিকুইড ক্রিস্টালের ধর্ম ও বৈশিষ্ট্য বর্ননা করেন এবং একে তিনটি ভাগে ভাগ করেন (যেমন, নেমাটিকস, স্মেটিকস এবং কোলেস্টেরিকস্্)।
১৯৩৬: “দ্যা লিকুইড ক্রিস্টাল লাইট ভালভ্্” তৈরী করার মধ্যমে মার্কনী কোম্পানী এই প্রযুক্তির প্রথম ব্যবহারিক প্রয়োগ দেখায়।
১৯৬২: ‘আর সি এ’ এর গবেষক রিচার্ড উইলিয়ামস্্ দেখলেন যে লিকুইড ক্রিস্টালের কিছু মজার ইলেক্ট্রো অপটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তিনি বৈদ্যুতিক ভোল্টেজ ব্যবহারের মাধ্যমে লিকুইড ক্রিস্টালের পাতলা লেয়ারের মধ্যে স্ট্রাইপ প্যাটার্ন তৈরী করতে সক্ষম হন এবং এভাবে তিনি একটি ইলেক্ট্রো অপটিক্যাল ইফেক্ট অনুভব করেন। এটি মূলত “ইলেক্ট্রো হাইড্রোডিনামিক ইস্ট্যাবিলিটি ফরমেটিং” এর ওপর ভিত্তি করে তৈরী হয়। যেটা বর্তমানে “উইলিয়ামস্্ ডোমেইনস্্” নামে পরিচিত।
১৯৬৪: জর্জ এইচ হেইলমিয়ার ‘আর সি এ’ তে কর্মরত অবস্থায় রিচার্ড উইলিয়ামের ইফেক্ট এ বর্ন পরিবর্তন ব্যবস্থা প্রদানে সক্ষম হন। কিন্তু এই নতুন ব্যবস্থার ব্যবহারিক প্রয়োগে কিছু সমস্যার ফলে তিনি এটা নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। এবং শেষ পর্যন্ত তার হাত ধরেই প্রথমবারের মতো লিকুড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে আবিষ্কৃত হয়। তিনি প্রক্রিয়াটির যে নাম দেন তা হল ডিএসএম (ডিন্যামিক স্ক্যাটারিং মুড)। ফলে জর্জ এইচ হেইলমিয়ার কেই এলসিডি এর জনক বলা হয়।
১৯৭০: ডিসেম্বরের চার তারিখে সুইজারল্যান্ডের হফম্যান-লারোব কোম্পানী লিকুইড ক্রিস্টালের টুইস্টেড নেম্যাটিক ফিল্ড প্রভাব এর প্যাটেন্ট তৈরীর সিদ্ধান্ত নেয়। এবং অল্প সময়ের মধ্যেই সুইজারল্যান্ড ও জাপানের বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক কোম্পানিতে হাতঘড়িসহ বিভিন্ন পন্যে এলসিডি এর ব্যবহার শুরু হয়। সেখানে মুলত টিএস-এলসিডি (টুইস্টেড নেম্যাটিক-এলসিডি) ব্যবহার করা হয়।
১৯৭১: ফেরগ্যাসন ইলিক্সকো (বর্তমানে এলএক্সডি ইনকরপোরেটেড) প্রথমবারের মতো এলসিডি প্রস্তুত করে।
১৯৭২: যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম এ্যকটিভ-ম্যাট্রিক্স এলসিডি প্যানেল তৈরী হয়।
১৯৯৬: প্রথমবারের মতো মাল্টি-ডোমেইন এলসিডি তৈরী করে স্যামস্যাং কোম্পনী। যে ডিজাইন বাজারে এখন পর্যন্ত রাজত্ব করছে।
১৯৯৭: টিভি হিসেবে ব্যবহারের জন্য “ইনপ্লেন সুইচিং” বা আইপিএস প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এলসিডি তৈরী করে হিটাচি।
২০০৭: এলসিডি টেলিভিশনের বিক্রি হার সিআরটি (ক্যাথোড রে টিউব) কে অতিক্রম করে।
এভাবে যুগ যুগ ধরে উন্নতির মাধ্যমে শতশত গবেষকের নিরলস গবেষনায় এলসিডি ডিসপ্লে মানুষের হাতের নাগালে আসে।
এলইডি ডিসপ্লে
এবারে জেনে নেব এলইডি এর সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত। মূলত দু ধরনের এলইডি প্যানেল রয়েছে। সাধারণ এবং এসএমডি (সারফেস মাউন্টেড ডিভাইস) প্যানেল, অধিকাংশ আউটডোর এবং খুব অল্প কিছু ইনডোর স্ক্রিণ সাধারণ প্যানেল ব্যবহার করে তৈরী করা হয়। যেখানে লাল নীল এবং সবুজ এই তিনটি বর্নের ডায়োড একটি পুর্ণ পিক্সেল তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। পিক্সেলসমুহ পরষ্পর থেকে সামান্য দুরে অবস্থান করে। এ প্রযুক্তির প্রধান সুবিধা হল উপযুক্ত উজ্জলতা। বাইরে ব্যবহৃত স্ক্রিনসমুহে উজ্জলতা বেশি না হলে দিনের আলোতে ভাল দেখা যাওয়ার কথা না। এলইডি প্রযুক্তি ৫,০০০ লাক্স উজ্জলতা বিশিষ্ট ডিসপ্লে প্রদান করে। এই উজ্জলতা দিনে সুর্যের আলোর চেয়েও উন্নত। ফলে যত রোদই হোক না কেন খুব সহজেই স্ক্রিনে চলমান ছবি দেখা যায়। এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত সবচেয়ে বড় এলইডি ডিসপ্লেটির অবস্থান হলো লাস ভেগাসএ, এবং এটি লম্বায় ১৫০০ ফিট এর বেশি। এসএমডি প্যানেল বিশিষ্ট ডিসপ্লেসমুহ সাধারণত ইনডোর স্ক্রিন নির্মানে ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে ডায়োড সমুহ একটি চিপসেটে সংযুক্ত থাকে। পিক্সেলসমুহ একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থান করে এবং এর উজ্জলতা কমপক্ষে ৬০০ লাক্স (ক্যান্ডেলস পার স্কয়ার মিটার) হয়।
LED প্রযুক্তির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
LED মুলত একটি ছোট আকারের আলোক নিংসরণকারী যন্ত্র। এলইডি ডিসপ্লের ইতিহাস আলোচনা করতে গেলে এই বস্তুটির ইতিহাস জানা আবশ্যক। এটি যুগের বিবর্তনে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়ে এবং হাজার হাজার এলইডি একত্রিত হয়ে তৈরী করেছে আজকের এলইডি ডিসপ্লে।
১৯০৭: মার্কনী ল্যাব এ কর্মরত অবস্থায় বিড়ালের গোঁফ ও সিলিকন কার্বাইড ডিটেক্টর ব্যবহার করে ব্রিটিশ গবেষক এইচ জে রাউন্ড আবিষ্কার করলেন ইলেক্ট্রালুমিন দৃশ্য।
১৯২৭: অলেগ ভøাদিমিরভিচ লোসেভ লাইট এমিটিং ডায়োড আবিষ্কারের ঘোষনা দেন।
১৯৬১: দুই আমেরিকান গবেষক রবার্ট রিচার্ড এবং গ্যারি পিটম্রান টেক্সাস ইনস্ট্রুমেন্টস এ কর্মরত অবস্থায় দেখলেন যে জিএএস (গ্যালিয়াম আরসেনাইড) এ বিদ্যুৎ প্রবাহের মাধ্যমে এ থেকে ইনফ্রারেড বিকিরন সম্ভব এবং এটি বাস্তবে পরীক্ষার মাধ্যমে ইনফ্রারেড এলইডি এর নামকরন করেন।
১৯৬২: ১৯৬২ সালে নিক হলোনায়ক্্ জুনিয়র প্রথমবারের মতো লাল রং এর এলইডি আবিষ্কার করেন। সুতরাং হলোনায়ক্্ ই হলেন এলইডি এর আবিষ্কারক।
১৯৬৮: এইচ পি (হিউলেট প্যাকার্ড) কোম্পানী গ্যানিয়াম আর্সেনাইড ফসফাইড ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ইনডিকেটরে ব্যবহারযোগ্য এলইডি তৈরী করে এবং তা ক্যালকুলেটরে ব্যবহার করতে সমর্থ হয়।
১৯৭৬: নতুন প্রজন্মের সেমিকন্ডাকটর আবিষ্কারের মাধ্যমে টিপি পিয়রেস্যাল তৈরী করেন উচ্চমানের উজ্জলতা ও উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন এলইডি। এবং এটি তৈরী করা হয় অপটিক্যাল ফাইবারে ব্যবহারের জন্য।
১৯৯৫: ক্যাডরিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেশনারত অ্যালবেটো বারকেইরির হাত ধরে আলোর মুখ দেখে ইনডিয়াম টিন অক্সাইড গঠিত এলইডি।
২০০৬: কয়েক বছর আগে সর্বপ্রথম উচ্চ-উজ্জলতা বিশিষ্ট নীল রং এর এলইডি তৈরী করতে সমর্থ হন সুজি নাকামুরা। ২০০৬ সালে তিনি এলইডি তে বিশেষ অবদানের জন্য মিলেনিয়াম টেকনোলজি পুরষ্কার গ্রহন করেন।
২০০৯: কলিন হামফ্রেয়স এর অধীনে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক গ্যালিয়াম নাইট্রাইড এলইডি প্রস্তুত করেন। ফলে এলইডি তে খরচ নব্বই শতাংশ কমে যায়।
এই হলো এলইডি এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। আনেকের মতে ১৯৯৯ এর কোন এক সময় প্রথম আধুনিক এলইডি ডিসপ্লে প্রদর্শিত হয় যা ছিল অনেকটা বর্তমান এলইডি টিভি বা মনিটরের মত।
এলসিডি বনাম এলইডি
এলসিডি এবং এলইডি দুধরনের ডিসপ্লেই খুব জনপ্রিয়। আপনার জন্য কোন প্রযুক্তি যথার্থ হবে তা বলে দিবে এই দুয়ের মধ্যকার পার্থক্য। আশাকরি পার্থক্যটা জানা থাকলে খুব সহজেই আপনি খুজে নিতে পারবেন উপযুক্ত ডিসপ্লে।
কন্ট্রাস্ট/ব্ল্যাক লেভেল
এলইডি এর কন্ট্রাস্ট রেশিও এলসিডি এর চেয়ে বেশি। এলসিডি এর একটি অন্যতম দুর্বলতা হলো এটি ইমেজ প্রদর্শনের সময় স্ক্রিন এ কিছু ব্ল্যাক লেভেল সৃষ্টি করে। ফলে কন্ট্রাস্ট রেশিও কমে যায়। এবং ইমেজ এর প্রকৃত দৃশ্য পুরোপুরি প্রকশিত হয়না। এলইডি তে এই ব্ল্যাক লেভেল ব্যাকলাইট এর সাহায্যে প্রশমিত হয়। ফলে পার্ফরমেন্স এলসিডি এর চেয়ে ভাল হয়।
বাস্তব বর্ণ প্রদর্শন
সাদা রং এর ক্ষেত্রে দুয়ের পার্থক্য তেমন একটা না থাকলেও আর জি বি (RGB) অথবা বেশ কিছু বর্ণ-মিশ্রিত দৃশ্য প্রদর্শনের সময় ব্যাকলাইট এলইডি তে বাস্তবধর্মী বর্ণ পাওয়া যায়।
ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল
এলইডি ডিসপ্লেতে ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল এলসিডি এর চেয়ে অনেক বেশি। ফলে এলইডি’তে এক পাশ থেকেও পরিষ্কার ছবি দেখা যায়।
সাইজ
এলসিডি এর সাইজ লিমিট মোটামুটি ১৫থেকে ৬৫ইঞ্চি। এবং এলইডি এর সাইজ লিমিট হলো ১৭ইঞ্চি থেকে ৭০ ইঞ্চি পর্যন্ত।
ভিডিও প্লেব্যাক
এলইডিতে রেসপন্স রেট এলসিডি’র চেয়ে কম হওয়ায় ইমেজ ব্লুরিং বা মোশন ট্যাগ সমস্যাসমুহ এখানে অনুপস্থিত। ফলে আপনি পাচ্ছেন ঝকঝকে ছবির নিশ্চয়তা।
বিদ্যুৎ শক্তির ব্যবহার
এলইডি তুলনামুলক কম শক্তি ব্যবহার করে এবং অধিকতর উজ্জল ডিসপ্লে প্রদান করে।
প্রকৃতপক্ষে এলইডি হল এলসিডি এর পরবর্তী প্রজন্ম। তাই এলসিডি এর অধিকাংশ দোষক্রুটি এখানে অনুপস্থিত। বাজারে নতুন হওয়ায় এলইডি ডিসপ্লে অনেকের কাছেই ভরসার পাত্র নয়। ফলে “এলসিডি নাকি এলইডি” কিনবেন এই নিয়ে ক্রেতা পড়েন বিপাকে। তাই দুটি প্রযুক্তির কিছু খুটিনাটি দিক নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করলাম। আশাকরি পাঠক উপকৃত হবেন। প্রকৃতির একটি অসমনীতি রয়েছে আর তা হল “নতুনকে আমন্ত্রন ও পুরাতনকে বিদায়”। যুগে যুগে বহু নতুন নতুন প্রযুক্তি পুরাতন হয়েছে এবং বিদায় নিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় হয়তো এলইডি ডিসপ্লের আগমন। অনেকের ধারনা এলসিডি যেমন সিআরটি কে বাজার থেকে নর্দমায় ছুঁড়ে ফেলেছে তেমনি এলইডি ছুঁড়ে ফেলে দেবে এলসিডিকে। নিত্যনতুন প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় মানব সভ্যতায় টিকে থাকবে যা কিছু সত্য, সুন্দর, শ্রেষ্ঠ। বাজারে নতুন ডিসপ্লের আগমনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি।
সংগৃহীত
LCD, LED এর বয়োজ্যোষ্ঠ। তাই শুরুতেই LCD কে আলোচনায় নিয়ে আশাটা যুক্তিযুক্ত।
LCD ডিসপ্লে
LCD ডিসপ্লেতে প্রতিটি পিক্সেল তিনটি সাবপিক্সেলে বিভক্ত যাদের একটি লাল, একটি সবুজ এবং অবশিষ্টটি নীল রং বিশিষ্ট। এদের একটি অপরটির সাথে বিভিন্ন ফিল্টার দ্বারা যুক্ত থাকে। যেমন পিগমেন্ট ফিল্টার, ডাই ফিল্টার এবং মেটাল অক্সাইড ফিল্টার। প্রতিটি সাবপিক্সেলের বর্ণ বিভিন্ন মাত্রায় পরিবর্তন করে পিক্সেলকে লাকখানেক রং প্রদান করা যায়। এভাবে প্রতি মিলিসেকেন্ডে বারবার রং পরিবর্তনের মাধ্যমে মনুষ্য জীবনকে রাঙিয়ে তুলছে LCD ডিসপ্লে।
LCD প্রযুক্তির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
গোড়া থেকে আজ অবধি LCD’র ইতিহাস জানার জন্য পাঠককে নিয়ে যাচ্ছি ১৮৮৮ সালে। যেখানে গাজর নিয়ে গবেষনা হচ্ছিল, গবেষকের নাম ফ্রিডরিক রেইনিটজার (১৮৫৮-১৯২৭)।
১৮৮৮: গাজর থেকে সংগৃহিত কোলেস্টেরল এর “লিকুইড ক্রিস্টালাইন বৈশিষ্ট্য” আবিষ্কার করেন ফ্রিডরিক রেইনিটজার এবং ১৮৮৮ সালের ৩রা মে তারিখে তিনি ভিয়েনা ক্যামিক্যেল সোসাইটির একটি মিটিংএ তাঁর গবেষনালব্ধ ফলাফল প্রকাশ করেন।
১৯০৪: “ফ্লুসিগি ক্রিস্টাল” (লিকুইড ক্রিস্টাল) নামে অট্টো লেহম্যান্ন এর গবেষনা লব্ধ ফলাফল প্রকাশিত হয়।
১৯১১: প্রথমবারের মতো লিকুইড ক্রিস্টালকে পাতলা লেয়ারের মধ্যে বন্দি করতে সমর্থ্য হন চার্লস ম্যাগুইন।
১৯২২: জর্জেস ফ্রিডেল লিকুইড ক্রিস্টালের ধর্ম ও বৈশিষ্ট্য বর্ননা করেন এবং একে তিনটি ভাগে ভাগ করেন (যেমন, নেমাটিকস, স্মেটিকস এবং কোলেস্টেরিকস্্)।
১৯৩৬: “দ্যা লিকুইড ক্রিস্টাল লাইট ভালভ্্” তৈরী করার মধ্যমে মার্কনী কোম্পানী এই প্রযুক্তির প্রথম ব্যবহারিক প্রয়োগ দেখায়।
১৯৬২: ‘আর সি এ’ এর গবেষক রিচার্ড উইলিয়ামস্্ দেখলেন যে লিকুইড ক্রিস্টালের কিছু মজার ইলেক্ট্রো অপটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তিনি বৈদ্যুতিক ভোল্টেজ ব্যবহারের মাধ্যমে লিকুইড ক্রিস্টালের পাতলা লেয়ারের মধ্যে স্ট্রাইপ প্যাটার্ন তৈরী করতে সক্ষম হন এবং এভাবে তিনি একটি ইলেক্ট্রো অপটিক্যাল ইফেক্ট অনুভব করেন। এটি মূলত “ইলেক্ট্রো হাইড্রোডিনামিক ইস্ট্যাবিলিটি ফরমেটিং” এর ওপর ভিত্তি করে তৈরী হয়। যেটা বর্তমানে “উইলিয়ামস্্ ডোমেইনস্্” নামে পরিচিত।
১৯৬৪: জর্জ এইচ হেইলমিয়ার ‘আর সি এ’ তে কর্মরত অবস্থায় রিচার্ড উইলিয়ামের ইফেক্ট এ বর্ন পরিবর্তন ব্যবস্থা প্রদানে সক্ষম হন। কিন্তু এই নতুন ব্যবস্থার ব্যবহারিক প্রয়োগে কিছু সমস্যার ফলে তিনি এটা নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। এবং শেষ পর্যন্ত তার হাত ধরেই প্রথমবারের মতো লিকুড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে আবিষ্কৃত হয়। তিনি প্রক্রিয়াটির যে নাম দেন তা হল ডিএসএম (ডিন্যামিক স্ক্যাটারিং মুড)। ফলে জর্জ এইচ হেইলমিয়ার কেই এলসিডি এর জনক বলা হয়।
১৯৭০: ডিসেম্বরের চার তারিখে সুইজারল্যান্ডের হফম্যান-লারোব কোম্পানী লিকুইড ক্রিস্টালের টুইস্টেড নেম্যাটিক ফিল্ড প্রভাব এর প্যাটেন্ট তৈরীর সিদ্ধান্ত নেয়। এবং অল্প সময়ের মধ্যেই সুইজারল্যান্ড ও জাপানের বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক কোম্পানিতে হাতঘড়িসহ বিভিন্ন পন্যে এলসিডি এর ব্যবহার শুরু হয়। সেখানে মুলত টিএস-এলসিডি (টুইস্টেড নেম্যাটিক-এলসিডি) ব্যবহার করা হয়।
১৯৭১: ফেরগ্যাসন ইলিক্সকো (বর্তমানে এলএক্সডি ইনকরপোরেটেড) প্রথমবারের মতো এলসিডি প্রস্তুত করে।
১৯৭২: যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম এ্যকটিভ-ম্যাট্রিক্স এলসিডি প্যানেল তৈরী হয়।
১৯৯৬: প্রথমবারের মতো মাল্টি-ডোমেইন এলসিডি তৈরী করে স্যামস্যাং কোম্পনী। যে ডিজাইন বাজারে এখন পর্যন্ত রাজত্ব করছে।
১৯৯৭: টিভি হিসেবে ব্যবহারের জন্য “ইনপ্লেন সুইচিং” বা আইপিএস প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এলসিডি তৈরী করে হিটাচি।
২০০৭: এলসিডি টেলিভিশনের বিক্রি হার সিআরটি (ক্যাথোড রে টিউব) কে অতিক্রম করে।
এভাবে যুগ যুগ ধরে উন্নতির মাধ্যমে শতশত গবেষকের নিরলস গবেষনায় এলসিডি ডিসপ্লে মানুষের হাতের নাগালে আসে।
এলইডি ডিসপ্লে
এবারে জেনে নেব এলইডি এর সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত। মূলত দু ধরনের এলইডি প্যানেল রয়েছে। সাধারণ এবং এসএমডি (সারফেস মাউন্টেড ডিভাইস) প্যানেল, অধিকাংশ আউটডোর এবং খুব অল্প কিছু ইনডোর স্ক্রিণ সাধারণ প্যানেল ব্যবহার করে তৈরী করা হয়। যেখানে লাল নীল এবং সবুজ এই তিনটি বর্নের ডায়োড একটি পুর্ণ পিক্সেল তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। পিক্সেলসমুহ পরষ্পর থেকে সামান্য দুরে অবস্থান করে। এ প্রযুক্তির প্রধান সুবিধা হল উপযুক্ত উজ্জলতা। বাইরে ব্যবহৃত স্ক্রিনসমুহে উজ্জলতা বেশি না হলে দিনের আলোতে ভাল দেখা যাওয়ার কথা না। এলইডি প্রযুক্তি ৫,০০০ লাক্স উজ্জলতা বিশিষ্ট ডিসপ্লে প্রদান করে। এই উজ্জলতা দিনে সুর্যের আলোর চেয়েও উন্নত। ফলে যত রোদই হোক না কেন খুব সহজেই স্ক্রিনে চলমান ছবি দেখা যায়। এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত সবচেয়ে বড় এলইডি ডিসপ্লেটির অবস্থান হলো লাস ভেগাসএ, এবং এটি লম্বায় ১৫০০ ফিট এর বেশি। এসএমডি প্যানেল বিশিষ্ট ডিসপ্লেসমুহ সাধারণত ইনডোর স্ক্রিন নির্মানে ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে ডায়োড সমুহ একটি চিপসেটে সংযুক্ত থাকে। পিক্সেলসমুহ একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থান করে এবং এর উজ্জলতা কমপক্ষে ৬০০ লাক্স (ক্যান্ডেলস পার স্কয়ার মিটার) হয়।
LED প্রযুক্তির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
LED মুলত একটি ছোট আকারের আলোক নিংসরণকারী যন্ত্র। এলইডি ডিসপ্লের ইতিহাস আলোচনা করতে গেলে এই বস্তুটির ইতিহাস জানা আবশ্যক। এটি যুগের বিবর্তনে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়ে এবং হাজার হাজার এলইডি একত্রিত হয়ে তৈরী করেছে আজকের এলইডি ডিসপ্লে।
১৯০৭: মার্কনী ল্যাব এ কর্মরত অবস্থায় বিড়ালের গোঁফ ও সিলিকন কার্বাইড ডিটেক্টর ব্যবহার করে ব্রিটিশ গবেষক এইচ জে রাউন্ড আবিষ্কার করলেন ইলেক্ট্রালুমিন দৃশ্য।
১৯২৭: অলেগ ভøাদিমিরভিচ লোসেভ লাইট এমিটিং ডায়োড আবিষ্কারের ঘোষনা দেন।
১৯৬১: দুই আমেরিকান গবেষক রবার্ট রিচার্ড এবং গ্যারি পিটম্রান টেক্সাস ইনস্ট্রুমেন্টস এ কর্মরত অবস্থায় দেখলেন যে জিএএস (গ্যালিয়াম আরসেনাইড) এ বিদ্যুৎ প্রবাহের মাধ্যমে এ থেকে ইনফ্রারেড বিকিরন সম্ভব এবং এটি বাস্তবে পরীক্ষার মাধ্যমে ইনফ্রারেড এলইডি এর নামকরন করেন।
১৯৬২: ১৯৬২ সালে নিক হলোনায়ক্্ জুনিয়র প্রথমবারের মতো লাল রং এর এলইডি আবিষ্কার করেন। সুতরাং হলোনায়ক্্ ই হলেন এলইডি এর আবিষ্কারক।
১৯৬৮: এইচ পি (হিউলেট প্যাকার্ড) কোম্পানী গ্যানিয়াম আর্সেনাইড ফসফাইড ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ইনডিকেটরে ব্যবহারযোগ্য এলইডি তৈরী করে এবং তা ক্যালকুলেটরে ব্যবহার করতে সমর্থ হয়।
১৯৭৬: নতুন প্রজন্মের সেমিকন্ডাকটর আবিষ্কারের মাধ্যমে টিপি পিয়রেস্যাল তৈরী করেন উচ্চমানের উজ্জলতা ও উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন এলইডি। এবং এটি তৈরী করা হয় অপটিক্যাল ফাইবারে ব্যবহারের জন্য।
১৯৯৫: ক্যাডরিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেশনারত অ্যালবেটো বারকেইরির হাত ধরে আলোর মুখ দেখে ইনডিয়াম টিন অক্সাইড গঠিত এলইডি।
২০০৬: কয়েক বছর আগে সর্বপ্রথম উচ্চ-উজ্জলতা বিশিষ্ট নীল রং এর এলইডি তৈরী করতে সমর্থ হন সুজি নাকামুরা। ২০০৬ সালে তিনি এলইডি তে বিশেষ অবদানের জন্য মিলেনিয়াম টেকনোলজি পুরষ্কার গ্রহন করেন।
২০০৯: কলিন হামফ্রেয়স এর অধীনে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক গ্যালিয়াম নাইট্রাইড এলইডি প্রস্তুত করেন। ফলে এলইডি তে খরচ নব্বই শতাংশ কমে যায়।
এই হলো এলইডি এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। আনেকের মতে ১৯৯৯ এর কোন এক সময় প্রথম আধুনিক এলইডি ডিসপ্লে প্রদর্শিত হয় যা ছিল অনেকটা বর্তমান এলইডি টিভি বা মনিটরের মত।
এলসিডি বনাম এলইডি
এলসিডি এবং এলইডি দুধরনের ডিসপ্লেই খুব জনপ্রিয়। আপনার জন্য কোন প্রযুক্তি যথার্থ হবে তা বলে দিবে এই দুয়ের মধ্যকার পার্থক্য। আশাকরি পার্থক্যটা জানা থাকলে খুব সহজেই আপনি খুজে নিতে পারবেন উপযুক্ত ডিসপ্লে।
কন্ট্রাস্ট/ব্ল্যাক লেভেল
এলইডি এর কন্ট্রাস্ট রেশিও এলসিডি এর চেয়ে বেশি। এলসিডি এর একটি অন্যতম দুর্বলতা হলো এটি ইমেজ প্রদর্শনের সময় স্ক্রিন এ কিছু ব্ল্যাক লেভেল সৃষ্টি করে। ফলে কন্ট্রাস্ট রেশিও কমে যায়। এবং ইমেজ এর প্রকৃত দৃশ্য পুরোপুরি প্রকশিত হয়না। এলইডি তে এই ব্ল্যাক লেভেল ব্যাকলাইট এর সাহায্যে প্রশমিত হয়। ফলে পার্ফরমেন্স এলসিডি এর চেয়ে ভাল হয়।
বাস্তব বর্ণ প্রদর্শন
সাদা রং এর ক্ষেত্রে দুয়ের পার্থক্য তেমন একটা না থাকলেও আর জি বি (RGB) অথবা বেশ কিছু বর্ণ-মিশ্রিত দৃশ্য প্রদর্শনের সময় ব্যাকলাইট এলইডি তে বাস্তবধর্মী বর্ণ পাওয়া যায়।
ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল
এলইডি ডিসপ্লেতে ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল এলসিডি এর চেয়ে অনেক বেশি। ফলে এলইডি’তে এক পাশ থেকেও পরিষ্কার ছবি দেখা যায়।
সাইজ
এলসিডি এর সাইজ লিমিট মোটামুটি ১৫থেকে ৬৫ইঞ্চি। এবং এলইডি এর সাইজ লিমিট হলো ১৭ইঞ্চি থেকে ৭০ ইঞ্চি পর্যন্ত।
ভিডিও প্লেব্যাক
এলইডিতে রেসপন্স রেট এলসিডি’র চেয়ে কম হওয়ায় ইমেজ ব্লুরিং বা মোশন ট্যাগ সমস্যাসমুহ এখানে অনুপস্থিত। ফলে আপনি পাচ্ছেন ঝকঝকে ছবির নিশ্চয়তা।
বিদ্যুৎ শক্তির ব্যবহার
এলইডি তুলনামুলক কম শক্তি ব্যবহার করে এবং অধিকতর উজ্জল ডিসপ্লে প্রদান করে।
প্রকৃতপক্ষে এলইডি হল এলসিডি এর পরবর্তী প্রজন্ম। তাই এলসিডি এর অধিকাংশ দোষক্রুটি এখানে অনুপস্থিত। বাজারে নতুন হওয়ায় এলইডি ডিসপ্লে অনেকের কাছেই ভরসার পাত্র নয়। ফলে “এলসিডি নাকি এলইডি” কিনবেন এই নিয়ে ক্রেতা পড়েন বিপাকে। তাই দুটি প্রযুক্তির কিছু খুটিনাটি দিক নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করলাম। আশাকরি পাঠক উপকৃত হবেন। প্রকৃতির একটি অসমনীতি রয়েছে আর তা হল “নতুনকে আমন্ত্রন ও পুরাতনকে বিদায়”। যুগে যুগে বহু নতুন নতুন প্রযুক্তি পুরাতন হয়েছে এবং বিদায় নিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় হয়তো এলইডি ডিসপ্লের আগমন। অনেকের ধারনা এলসিডি যেমন সিআরটি কে বাজার থেকে নর্দমায় ছুঁড়ে ফেলেছে তেমনি এলইডি ছুঁড়ে ফেলে দেবে এলসিডিকে। নিত্যনতুন প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় মানব সভ্যতায় টিকে থাকবে যা কিছু সত্য, সুন্দর, শ্রেষ্ঠ। বাজারে নতুন ডিসপ্লের আগমনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি।
সংগৃহীত
Subscribe to:
Posts (Atom)
ওয়ানপ্লাসের নতুন অক্সিজেন ওএস ১৫ আসছে AI নিয়ে
অ্যান্ড্রয়েড ১৫ এর ওপর ভিত্তি করে আসছে ওয়ানপ্লাসের অক্সিজেন ওএস ১৫। অক্টোবরের ২৪ তারিখ বাংলাদেশ সময় রাত ৯:৩০ এ আনুষ্ঠানিকভাবে অপ...
-
আপনার মোবাইল পানিতে পড়ে গেলে যত তারাতারি সম্ভব আপনার মুঠোফোনটিকে পানি থেকে তোলার ব্যবস্থা করুন। মনে রাখবেন, যত দেরী হবে আপনার মুঠোফোনটির ...
-
(Install K lite Codec - For Download K-Lite Codec Pack 7.1.0 Full/ Corporate/ Standard...
-
নতুন অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন কেনার পর এই অ্যাপ গুলো আপনার ফোনে না থাকলেই নয়। তো চলুন দেখে নিই অ্যান্ড্রয়েড এর কিছু বেসিক অ্যাপ … Andr...