Wednesday, September 14, 2011

বাংলা মুভি বাংলা রিভিউ- “অন্তহীন”

যুগটা তারুণ্যের। জীবন তাদের জন্যই যারা জীবনকে সুন্দরকে করে বাঁচতে জানে। সে জন্যই তো তারুণ্যের সংজ্ঞা শুধুমাত্র বয়সের সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করা যায় না। সে জন্য আজকাল সবাই বলে ওঠে : “Yo man! Wassup?? We are the facebook generation. Yeah!” । সর্বদা মজা করা , “পলিটিক্স দেশটাকে শেষ করে দিল “ এইভাবেই চলে সবার জীবন। কিন্তু এই জীবনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা দার্শনিক রুপকে কি দেখেছে কেউ?? কিন্তু সেরকমই এক অসম্ভবের চেষ্টা করেছেন পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী তার জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী মুভি “অন্তহীন” এ।
কাহিনী জানা যাক। বৃন্দা (Radhika Apte) একজন টেলিভিশন সাংবাদিক । শহরের বর্তমানের তাজা খবর হলো পুলিশ গোয়েন্দা অভিক চৌধুরীর (রাহুল বসু) কীর্তি ... সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে বিপুল অস্ত্র ভান্ডার এর খোঁজ ... ইত্যাদি ইত্যাদি। বৃন্দা , অভিকের একটি সাক্ষাৎকার নিতে চায়। কিন্তু অভিকের সরাসরি নিষেধ। দুজন তাদের সকল ব্যস্ততায় ক্ষান্তি দেবার পর বাসার এক কোণে নিজেদের Laptop এ খোঁজে ক্ষণিকের মানসিক প্রশান্তি। ইন্টারনেটের চ্যাটের মাধ্যমে তাদের গাঢ় বন্ধুত্ব, কিন্তু তারা জানেই না একে অপরের পরিচয়। ধীরে ধীরে মুভিটিতে আরো কিছু চরিত্রের আগমন ঘটে। পারো দিদি (অপর্ণা সেন) বৃন্দার সহকর্মী এবং অভিকের বড় ভাই রন্জন (কল্যাণ রায়) এর স্ত্রী। কিন্তু অনেক বছর ধরেই রন্জন ও পারোর বিচ্ছেদ তবে ঠিক ডিভোর্স নয়। সত্যি কথা বলতে ওরা একে অপরকে প্রচন্ড ভালোবাসে কিন্তু দূরত্বকেই ওরা আপন করে নিয়েছে। পারোদির মাধ্যমেই বৃন্দা ও অভিকের সত্যিকার দুনিয়াতে দেখা হয়। ধীরে ধীরে একটু একটু বন্ধুত্ব। কিন্তু বৃন্দা জড়িয়ে যায় এক বড় ধরণের ব্যবসায়ী সংগঠকদের জালে। তাদের Real Estate ব্যবসার পিছনে ঘৃণ্য সকল কর্মকে মানুষের সামনে তুলে ধরার চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে পরে বৃন্দা। এদিকে অভিক তার Laptop এর Chat এর মানুষকে ভালোবেসে ফেলে। দুজনে সীদ্ধান্তে আসে যে তারা দেখা করবে, অন্তহীন অপেক্ষার সমাপ্তি করবে। একদিন অভিক জানতে পারে যে ব্রিন্দাই সেই মেয়েটি কিন্তু সে দিন বদলে গেছে অনেক কিছুই।
বৃন্দা চরিত্রে Radhika Apte দারুন অভিনয় করেছেন। রাহুল বসু বেশ ভালো করলেও তার চরিত্রটি একটু চুপচাপ ধরণের। রন্জন চরিত্রে কল্যাণ রায় এবং ভি.কে. মেহরা চরিত্রে শৌভিক কুন্ডগ্রামির অভিনয় ছিল বেশ প্রশংসনীয়। শর্মিলা ঠাকুর অভিকের পিসী চরিত্রের বেশ দারুন করেছেন। মুভিটির সংগীত ছিল বেশ আকর্ষণীয়। শান্তনু মৈত্রের সুরের প্রত্যেকটি গান বিশেষ করে শ্রেয়া ঘোষালের জাতীয় সংগীত জয়ী “যাও পাখি” বেশ শ্রুতিমধুর। তবে মুভিটির চিত্রনাট্য এবং পরিচালনা এক কথায় অসাধারণ। অভিকের পীসি (শর্মিলা ঠাকুর) তার জীবনে এসে যাওয়া ক্ষণিকের প্রেমের বর্ণনার দৃশ্যটি আসলেই চমৎকার। তবে মুভিটির বেশ কিছু অংশ বেশ বোরিং হলেও দারুন ডায়ালগ এবং নির্দেশনা মুভিটিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
মুভিটি একই সঙ্গে অনেকগুলো বিচ্ছিন্ন মানুষের জীবন কাহিনী ধরণের হলেও যেন এক সুরে বাধা একটি কাহিনী। বলতে গেলে ভারতের জাতীয় পুরস্কার বিজয় করে মুভিটি তার যোগ্যতা প্রমাণ করেছে।
রেটিং – ৩.৫ /৫

No comments:

Post a Comment

ওয়ানপ্লাসের নতুন অক্সিজেন ওএস ১৫ আসছে AI নিয়ে

  অ্যান্ড্রয়েড ১৫  এর ওপর ভিত্তি করে আসছে  ওয়ানপ্লাসের  অক্সিজেন    ওএস  ১৫। অক্টোবরের ২৪ তারিখ বাংলাদেশ সময় রাত ৯:৩০ এ আনুষ্ঠানিকভাবে অপ...