যাঁরা সাম্প্রতিক বিষয় সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন, তাঁরা অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন হন। এ কারণে তাঁরা বেশিদিন বাঁচেন—এমনই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি ইতালিতে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষ বেশি বেশি সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও ইন্টারনেটের সংস্পর্শে থাকেন, তাঁরা বেশি স্বাস্থ্যকর খাবার খান। অন্যদিকে গণমাধ্যম থেকে দূরে থাকা মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবারের সন্ধান কম পান।
‘ক্যাথোলিক ইউনিভার্সিটি অব রোমে’র চিকিত্সক অ্যামেরিকো বোনানি ওই গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। এতে দেখা যায়, গণমাধ্যমের সংস্পর্শে থাকলে মানুষ বেশি বেশি স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক তথ্য পায়। এতে তারা বেশি স্বাস্থ্যসচেতন হয়ে ওঠে। গবেষকেরা এক হাজার প্রাপ্ত বয়ষ্ক মানুষের ওপর জরিপ করে দেখেন, বেশি তথ্য পাওয়ার সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসের সম্পর্ক রয়েছে।
‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব পাবলিক হেলথ’ সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, গণমাধ্যমের নিবিড় সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিরা বেশি পরিমাণ স্বাস্থ্যকর খাবার, তাজা মাছ, ফলমূল, শাকসবজি খান। এ ধরনের খাবার হূদরোগ ও ক্যানসার ছাড়াও মুটিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও কমায়।
এর আগে পরিচালিত আরেকটি গবেষণায় দেখা যায়, মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর গণমাধ্যমের ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। সে সময় বলা হয়েছিল, ঘরে শুয়ে-বসে টেলিভিশন দেখতে দেখতে মানুষের শরীর অচল হয়ে পড়ে। টেলিভিশন দেখে মানুষ ফাস্ট ফুড খাবার গ্রহণে উত্সাহী হয়ে ওঠে, যা হূদরোগ বা স্থূলকায় হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। কিন্তু সাম্প্রতিক এই গবেষণায় দেখা গেছে, টেলিভিশনে প্রদর্শিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান দেখে মানুষ স্বাস্থ্যবিষয়ক নানা টিপস ও তথ্য পাচ্ছে। এতে দিন দিন তারা স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠছে।
জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের কাছে টেলিভিশন দেখা, সংবাদপত্র ও সাময়িকী পড়া এবং ইন্টারনেটে সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট ব্যবহারবিষয়ক প্রশ্নের পাশাপাশি তাদের জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস, চিকিত্সা-সম্পর্কিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়। গবেষণায় দেখা যায়, যারা সাম্প্রতিক ইস্যুতে বেশি কৌতূহলী তাঁরা বেশি ভালো খাবার খান।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, গণমাধ্যমে প্রতিনিয়ত এইচআইভি/এইডস, অ্যালকোহল, ধূমপান, মাদকের বিরুদ্ধে প্রচারাভিযান চালানোর ফলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে ইন্টারনেটভিত্তিক সংবাদপত্রগুলোতে আজকাল প্রায়ই স্বাস্থ্যবিষয়ক নানা টিপস, তথ্য সরবরাহ করছে, যা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের স্বাস্থ্য বিষয়ে আর সচেতন করছে।
No comments:
Post a Comment