সবচাইতে জনপ্রিয় ১০টি ইন্টারনেট ব্রাউজারের নাম প্রকাশ করা হয়। আজ আমরা এই ১০টি ব্রাউজার, এদের রেটিং(১০ এর মধ্যে) এবং কেন এটি জনপ্রিয় সেই সম্পর্কে জানবো।
1. Google Chrome(Rating-9.85) :
১১ ডিসেম্বর ২০০৮ এ গুগল প্রথম তাদের ওয়েব ব্রাউজার Google Chrome বাজারে আনে। তখন ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার এবং মজিলা ফায়ারফক্সের রাজত্ব। অনেক বিশেষজ্ঞই Google Chrome এর সাফল্য নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে এই ইন্টারনেট ব্রাউজারটি আইটি বিশ্বের সেরা ব্রাউজারের জায়গা দখল করে নেয়। বিস্ময়কর ভাবে এই ব্রাউজারটির ব্যবহারকারী ৭০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যায় মাত্র ২ বছরে। ২০১২ সাল পর্যন্ত এর ব্যবহারকারী ১১৯ মিলিয়ন বলে জানিয়েছে ব্রাউজারটির স্বত্বাধিকারী গুগল। এই ব্রাউজারটির এরূপ অভূতপূর্ব সাফল্যের পেছনে প্রধান কারণ হচ্ছে ব্রাউজারটির স্পীড। তৎকালীন প্রথম সারিতে থাকা ফায়ারফক্স এর তুলনায় গুগল ক্রোম অত্যন্ত দ্রুতগতির ব্রাউজার বলে বিবেচিত হয়। দ্রুতগতির এই ব্রাউজারটি তে JavaScript virtual machine বা V8 JavaScript engine, সংযোজন করা হয়েছে যার কারনে ব্রাউজারটির সার্চিং স্ট্যাবিলিটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে কাজ করে। তার পাশাপাশি এই ব্রাউজারে রয়েছে অত্যন্ত সফিসটিকেটেড প্রাইভেসি সেটিংস, ইউজার ইন্টারফেস, ওয়েব স্টোর, এক্সটেনশনস আর দৃষ্টিনন্দন ফিচার, যা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের হৃদয় জয় করে নেয়।
ডাউনলোড লিঙ্কঃhttps://www.google.com/intl/en/chrome/browser/?hl=en
2. Mozilla Firefox(Rating-9.33):
২০০৪ সালের ৯ নভেম্বর বাজারে আসে মজিলা ফায়ারফক্স। যারা এই ব্রাউজারটির জন্মদাতা ছিলেন তারা হলেন ডেভ হেয়াট, জো হেউইট আর ব্লেক রোজ। যারা একবিংশ শতাব্দীর প্রথম থেকে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, তারা এই ব্রাউজারটির সাথে অত্যন্ত ভালভাবে পরিচিত। অন্যান্য ইন্টারনেট ব্রাউজার এর তুলনায় এতে রয়েছে অত্যন্ত ক্রিয়াশীল জাভাস্ক্রিপ্ট এনাবল সার্চিং ইঞ্জিন, অ্যান্টিস্পামিং সিকিউরিটি। তার পাশাপাশি সে সময়কার ইন্টারনেট এর তুলনায় এটি দ্রুত হওয়ায় অনেক ব্যবহারকারীর হৃদয় জয় করে ফায়ারফক্স। অনেক অন্যান্য প্রধান ইন্টারনেট ব্রাউজারের তুলনায় ফায়ারফক্সে গৃহীত হয়েছে একটি দরকারী অথবা সুসংগঠিত ওয়ার্ক স্ট্যাবিলিটি যার মাধ্যমে আপনি আপনার ডেস্কটপে অথবা মোবাইল ব্রাউজারে আপনার ইতিহাস, পাসওয়ার্ড, বুকমার্কস এবং আরও অনেক একসেস করতে পারবেন. ব্রাউজারটি তে এছাড়াও tabbed ব্রাউজিং আছে, আপনি একটি উইন্ডোতে ওয়েব পেজ মধ্যে দ্রুত নেভিগেট করতে পারবেন। তার পাশাপাশি এই ওয়েব ব্রাউজারটিতে সংযোজন করা হয়েছিল পপ-আপ উইন্ডো মোকাবেলা করার ক্ষমতা, যা সত্যিই তৎকালীন সময়ের তুলনায় অগ্রগামী ছিল। ২০১০ সালে সর্বমোট ৪০০ মিলিয়ন ইউজারের কথা নিশ্চিত করেছেন ফায়ারফক্স প্রজেক্টের কর্মকর্তারা। তবে এই হিসাবে এটি প্রথমে থাকার কথা থাকলেও গুগল ক্রোমের অধিক দ্রুত গতির কারণেই ফায়ারফক্সকে নেমে আসতে হয় দ্বিতীয় স্থানে।
ডাউনলোড লিঙ্কঃhttp://www.mozilla.org/en-US/firefox/new/
3. Internet Explorer(Rating-9.03) :
নব্বইয়ের দশকে এই ব্রাউজারটি বাজারে ছেড়েছিল উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের নির্মাতা কোম্পানি মাইক্রোসফট। উইন্ডোজ ৯৪ থেকে শুরু হওয়া এই ব্রাউজারের পথচলা আজো থেমে থাকে নি। এখনও অনেক গ্রাহকের চাহিদা পূরণ করা এক্সপ্লোরার এখনও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করছে। তবে এটা সত্য কথা যুগের চাহিদা সঠিকভাবে পূরণ করতে না পারায় দিন দিন কমছে এর জনপ্রিয়তা। এই ব্রাউজারটির ফিচারিং ছিল অসাধারণ। তার পাশাপাশি ডাউনলোডিং এর দ্রুত গতি ক্ষমতা থাকলেও নেই পপআপ উইন্ডো আটকানো এবং অপ্রয়োজনীয় জাভাস্ক্রিপ্ট বন্ধ করার ব্যর্থতা,যা এর রেটিং কমিয়ে দেয়। বর্তমানে এর ব্যবহারকারী প্রায় ৫৭৮ মিলিয়ন।
ডাউনলোড লিঙ্কঃhttp://downloads.yahoo.com/internetexplorer/?AID=10881021&PID=3862354
4. Opera Mini(Rating-9.03) :
২০০৪ সালের ২৪ জানুয়ারি অপেরা মিনি বাজারে আসে। এটি প্রাথমিকভাবে জাভা মোবাইল ও স্মার্টফোনের জন্য বাজারে ছাড়া হলেও পরবর্তীতে ডেস্কটপ ব্রাউজার পূর্ণরূপে বাজারে ছাড়া হয়। যদিও অপেরা ব্রাউজার তৈরীর কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। ফিচারিং ভাল হলেও অনেক গ্রাহকেরই চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হয় নি ব্রাউজারটি।
ডাউনলোড লিঙ্কঃhttp://www.opera.com/
5. Safari(Rating-8.70) :
বিশ্বের অন্যতম কোম্পানি অ্যাপল এই ব্রাউজারটি বাজারে এনেছিল। প্রথমে এটি ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমের জন্য বাজারে এলেও পরে এটিকে উইন্ডোজের জন্য বাজারে আনা হয়। কিন্তু ফিচারিং যুগোপযোগী না হওয়ায় এটিও জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি।
ডাউনলোড লিঙ্কঃhttp://www.apple.com/safari/
6. Maxthon(Rating-8.03) :
এই ব্রাউজারটি আমেরিকান ইন্টারনেট ইউজাররা বেশি ব্যবহার করেন। এতে অন্যান্য ব্রাউজারের মত অত ফিচার না থাকলেও এর নেটয়ার্কিং সিস্টেম প্রশংসার দাবি রাখে। আর দ্রুতগতির কারণেই এটি সেরা দশে স্থান পেয়েছে।
ডাউনলোড লিঙ্কঃhttp://www.maxthon.com/
7. Rockmelt(Rating-7.38) :
ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটের জন্য এই ব্রাউজারটি বাজারে এসেছে। গুগল ক্রোমের আদলে তৈরী এই ব্রাউজারে সংযোজিত হয়েছে বিভিন্ন এক্সটেনশন সুবিধা। তবে ফেসবুক বা টুইটারের ক্ষেত্রে এটি ভাল কাজ করলেও এর অন্যান্য সুবিধা তেমন একটা উপকারী না হওয়ায় এটির স্থান হয়েছে সপ্তমে।
ডাউনলোড লিঙ্কঃhttp://www.rockmelt.com/
8. Sea Monkey(Rating-6.95) :
বিশেষজ্ঞরা বলেন এই ব্রাউজারটির ইন্টারনেট হুমকি প্রতিরোধ ব্যবস্থা অসাধারণ। কিন্তু ফিচারিং ও অন্যান্য সুবিধাদি শীর্ষস্থানীয় ব্রাউজারগুলোর মত না হওয়ায় এর অবস্থান অষ্টমে। তবে অনেকেরই ধারনা এর উন্নতি ঘটাতে পারলে এটি বিশাল বাজার দখল করতে সক্ষম।
ডাউনলোড লিঙ্কঃhttp://www.seamonkey-project.org/
9. Deepnet Explorer(Rating-6.83) :
এটি একটি মোটামুটি মানের ইন্টারনেট ব্রাউজার। ফিচারিং এ কিঞ্চিৎ উন্নতি প্রয়োজন। তবে বিভিন্ন ব্রাউজারের মত এর সাধারণ সুবিধা পদ্ধতি মানসম্মত হওয়ায় এটি সেরা দশে স্থান পেয়েছে।
ডাউনলোড লিঙ্কঃhttp://www.deepnetexplorer.com/download/download.asp
10. Avant Browser(Rating-6.58) :
আধুনিক ব্রাউজারের তুলনায় এটি একটু পশ্চাদগামী। কিন্তু ডিজাইন এবং সিস্টেম অনেকেরই দৃষ্টি কেড়েছে। আর সেই কারণেই এটি সেরা দশে।
ডাউনলোড লিঙ্কঃhttp://www.avantbrowser.com/
এই হল সেরা দশটি ইন্টারনেট ব্রাউজার। ডাউনলোড লিঙ্ক দিয়ে দিলাম, যার যেটা লাগে নিয়ে নেবেন। আজ এই পর্যন্তই। আবার আসবো হয়তো নতুন কিছু নিয়ে। ততোদিন সবাই ভালো থাকুন আর ভালো রাখুন আপনার পাশের মানুষটিকে।
ধন্যবাদ!
No comments:
Post a Comment