Thursday, January 5, 2012

ব্যান্ডউইথের দাম কমলেও ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ কমেনি

দেশে প্রায় চার বছরে ব্যান্ডউইথের মূল্য ৭৬ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকায় নেমে এসেছে।


২০০৭ সালে প্রতি মেগাবাইট ব্যান্ডউইথের মূল্য
ছিল ৭৬ হাজার টাকা। এরপর ৪৫ হাজার টাকায় নেমে আসে। এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে প্রতি মেগাবাইট ব্যান্ডউইথের মূল্য ১৮ হাজার থেকে কমিয়ে ১২ হাজার টাকায় নির্ধারণ করা হয়। সর্বশেষ গত ১ আগস্ট থেকে তা নির্ধারিত হয়েছে ১০ হাজার টাকায়। মাত্র আট মাসের মাথায় ১৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ মূল্য কমিয়ে তা ১০ হাজার টাকা নির্ধারিত হলো। তবে গ্রাহক পর্যায়ে এর প্রভাব মোটেই পড়েনি। খরচ না কমায় ইন্টারনেট ব্যবহার অনেকের জন্যই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আখতারুজ্জামান মঞ্জু জানিয়েছেন, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা (আইএসপি) শুধু ব্যান্ডউইথের দাম কমালেই ইন্টারনেটের খরচ কমাতে পারবে না। এর সাথে সংশ্লিষ্ট খরচগুলোও কমাতে হবে। শুধু ব্যান্ডউইথের দাম কমানো এমনকি এর মূল্য শূন্য করা হলেও ইন্টারনেটের খরচ কমানো সম্ভব নয়। ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে মোট খরচের মাত্র এক-চতুর্থাংশ ব্যান্ডউইথের পেছনে ব্যয় হয়। তাই শুধু ব্যান্ডউইথের দাম কমিয়ে সার্বিকভাবে গ্রাহকের ব্যবহারের ওপর এর প্রভাব ফেলা অসম্ভব। ৩৭ শতাংশ করপোরেট ট্যাক্সের পর আরো ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিয়ে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডরদের লাভ করার কোনো সুযোগ থাকে না। গ্রাহক পর্যায়ে মূল্য কমাতে হলে এই ট্যাক্সগুলো কমাতে হবে। এর সাথে ঢাকার বাইরে ইন্টারনেটের খরচ কমাতে ব্যাকহোলের মূল্য কমানোর প্রয়োজন। ১২৮ কিলোবাইট গতির আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথ পেতে চার বছর আগেও ৮০০ টাকা খরচ হতো। এখনো খরচের অঙ্ক একই রয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু জানিয়েছেন, এবার গ্রাহক পর্যায়ে খরচ কমানোর দিকেও নজর দেবে সরকার। এ জন্য ঢাকা বা চট্টগ্রামের বাইরে ব্যান্ডউইথ পরিবহনের বাড়তি খরচও (ব্যাকহোল প্রাইস) উল্লেখযোগ্য হারে কমানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
দেশের একমাত্র বেসরকারি ইন্টারনেট গেটওয়ে ম্যাঙ্গো টেলিকম সার্ভিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০০৭ সালে যখন ব্যান্ডউইথের মূল্য প্রতি মেগাবাইট ৭৬ হাজার টাকা ছিল তখন সারা দেশে মাত্র ৬০০ মেগাবাইট ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হতো। পরে ৪৫ হাজার টাকায় নেমে আসায় ব্যান্ডউইথের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়ে এক হাজার ১০০ মেগাবাইটে পৌঁছায়। এরপর পর্যায়ক্রমে ব্যান্ডউইথের মূল্য কমার সাথে সাথে ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। জানুয়ারিতে ব্যান্ডউইথের মূল্য যখন ১২ হাজার টাকায় নামিয়ে আনা হলো তখন মোট ব্যান্ডউইথের ব্যবহার চলে এলো ১২ গিগাবাইটে। সর্বশেষ এ মাসে প্রতি মেগাবাইট ব্যান্ডউইথের মূল্য আরো দুই হাজার টাকা কমানোর ফলে খুচরা গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ খুব একটা না কমলেও কোনো না কোনোভাবে বাজারে এর প্রভাব পড়বে। ব্যান্ডউইথের মূল্য কমার সাথে ইন্টারনেট গ্রাহক বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর পরও দেশে অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথ রয়ে যাচ্ছে। দেশে ব্যবহার উদ্বৃত্ত ব্যান্ডউইথ রফতানির বিষয়ে কয়েক দফা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দফায় দফায় ভারত-নেপাল-সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন কোম্পানি যোগাযোগ করছে সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির সাথে। সম্প্রতি এসব ব্যান্ডউইথ রফতানির ব্যাপারেও উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। অচিরেই হয়তো ব্যান্ডউইথ রফতানির আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছে বিএসসিসিএল কর্তৃপক্ষ। ­

No comments:

Post a Comment

ওয়ানপ্লাসের নতুন অক্সিজেন ওএস ১৫ আসছে AI নিয়ে

  অ্যান্ড্রয়েড ১৫  এর ওপর ভিত্তি করে আসছে  ওয়ানপ্লাসের  অক্সিজেন    ওএস  ১৫। অক্টোবরের ২৪ তারিখ বাংলাদেশ সময় রাত ৯:৩০ এ আনুষ্ঠানিকভাবে অপ...