Thursday, September 22, 2011

প্রতিদিনই পৃথিবী অতিক্রম করছে মিনি ব্ল্যাকহোল

নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে মিনিব্ল্যাকহোল প্রতিদিনই পৃথিবীকে অতিক্রম করছে। এরা অবশ্য পৃথিবীকে কোনো ক্ষতি করে না। গবেষণায় পৃথিবী ধ্বংসের মতো দৃশ্যপট পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। যাতে নার্জহ্যাডরন কোলাইডার এর মতো পরমাণু ধ্বংসকারী যন্ত্র থেকে গ্রহ গ্রাসকারী ব্ল্যাকহোনের সৃস্টি হয়। বিজ্ঞানীরা ইতোপূর্বে ব্ল্যাকহোলের নমুনা লার্জ হ্যাডরন কোলাইডার নাকম ভূ-গর্ভস্থ সুরঙ্গে পর্যবেক্ষণ করেছেন। কিন্তু বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে নতুন গবেষকরা বিশ্বাস করেন, মিনিব্ল্যাকহোল ক্ষুদে কৃষ্ণগহবর চাঁদের বড় বাই ব্ল্যাকহোল থেকে একেবারেই ভিন্ন। গভীর মহাশূন্যে এসব কৃষ্ণগহবর এ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল বা স্টেলারমাস নামে বিজ্ঞানীদের কাছে পরিচিত। নিজস্ব অবয়ব থেকে মিনি ব্ল্যাক হোলের ভর হাজারগুণ বেশি হলেও এর আকার একটি পরমাণুর চাইতেও ছোট। এই ক্ষুদ্রাকৃতি নিয়ে ব্ল্যাকহোল খুব বেশি পদার্থকে গ্রাস করে না এবং তার পরিকর্তে এরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরমাণুকে এবং কোনো কোনো সময় অপেক্ষাকৃত বড় অণুকে অবর্তনকারী অক্ষে আটকে ফেলে। পরমাণুর মধ্যে প্রোটনসমূহ যেভাবে ইলেকট্রনকে আকৃষ্ট করে আটকে ফেলে এটা অনেকটা সেরকম।

ক্যালিফোর্নিয়ার রেডউড সিটির জৈব প্রযুক্তির প্রতিষ্ঠান হ্যালসিয়ন মনি কুলারের গবেষক এবং এই গবেষণাকর্মের সহলেখক এ্যারন ভ্যানডেভেন্ডার পরিক্রমণরত বস্তুসহ মিনিব্ল্যাক হোলকে একটি পরমাণুর মধ্যাকর্ষণের সমরূপ বা গ্রাভিটেশনকে ইকুইভ্যালেন্টক অব এ্যান এ্যাটম [জিইএ] বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, জিইএ মুখী একটি পরমাণু বিচ্যুত হয়ে আপনাদের ওপর পতিত হলেও তা কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। এটা খুবই স্বল্পমাত্রার শক্তি বলে আপনারা তা বুঝতে পারবেন না। বিজ্ঞানীদের ধারণা বিশাল বিশাল মৃত প্রায় নক্ষত্র ধসে পড়ে স্টেনারমাস ব্ল্যাকহোল সৃস্টি হয়। মৃত নক্ষত্রসমূহের ঘনত্ব এত বেশি যে আলোও তাদের মহাকর্ষ টান থেকে রক্ষা পায় না। বহু স্টেলারমাস ব্ল্যাকহোল একীভূত হয়ে সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল গঠন করে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন। এই সুপারম্যাসিভ বা বিশাল কৃষ্ণগহবর আমাদের মিল্কিওয়েসহ বিশাল সব ছায়াপথের কেন্দ্রস্থলে অবস্থান করে। বিজ্ঞানীরা কুন্ডলী পাকিয়ে থাকা ব্ল্যাকহোল থেকে আসা অতি উত্তপ্ত পদার্থ নিঃসৃত আলো দেখতে পান যা পরিবৃদ্ধি চাকতি বা এ্যাক্রিশন ডি সৃষ্টিতে সহায়তা করে। এদিকে এই তত্ত্ব থেকে বুঝা যায়, বিশ্ব সৃষ্টির পরপরই বিপুল সংখ্যক ক্ষুদ্রাকার ব্ল্যাকহোল সৃষ্টি হয়েছে। গবেষক ভ্যান ডেভেন্ডার মনে করেন, বিশ্ব সৃষ্টির শুরুতেই অতি ঘনত্ব বিশিষ্ট পদার্থ ছড়িয়ে পড়ে এবং ঠান্ডা হতে থাকে। তিনি আরো বলেন, এই আদি পদার্থ বিশ্বব্রহ্মান্ডে শুরুতে সমানভাবে পড়েনি। তাই মহাশূন্যের কিছু কিছু অঞ্চলে অন্যগুলোর চাইতে ঘনত্ব তুলনামূলকভাবে বেশি এবং এই পদার্থের ঘনত্বে প্রায়ই ভিন্নতা থাকায় ওই সবের কিছু চাই থেকে শুরুতে ব্ল্যাকহোলসমূহ সৃষ্টি হয়। পদার্থ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং মনে করেন ক্ষুদে ব্ল্যাকহোলসমূহ প্রকৃতপক্ষে রেডিয়েশন বা তেজস্ক্রিয়তা আকারে ভর হারায় এবং শেষ পর্যায়ে বাীভূত হয়ে যায়। কিন্তু কখনো হকিং রেডিয়েশন চোখে পড়েনি তাই নতুন গবেষণায় দেখা গেছে ক্ষুদে আদিম ব্ল্যাকহোলসমূহের অস্তিত্ব এখনো বিশ্বব্রহ্মান্ডের রয়েছে। নিউ মেক্সিকোর আল বুকাকে অবস্থিত স্যান্ডিয়অ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিজের গবেষক ভ্যানডেভেন্ডার ও তার পিতা জে পেস ভ্যানডেভেন্ডার তাদের হিসাব নিকাশের ভিত্তিতে দেখিয়েছেন, প্রতিদিনই এ ধরনের এক বা দু'টি মিনি ব্ল্যাকহোল পৃথিবী অতিক্রম করে যাচ্ছে।

সম্প্রতি নাসার অনলাইনে প্রকাশিত নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, ক্ষুদ্র ও বৃহৎ ব্ল্যাকহোলের মধ্যে মূল আচারণগত পার্থক্য হচ্ছে তথাকথিত ইভেন্ট হরাইজন বা সংঘটন দিগন্তের ক্ষেত্রে। এ প্রসঙ্গে এ্যারন ভ্যানডেভেন্ডার বলেন, এই সংঘটন দিগন্ত হচ্ছে একটি বাস্তব ব্ল্যাক হোলের সম্ভাব্য নিকতম স্থান যেখান থেকে সেটির আর বেরিয়ে যাওয়ার উপায় থাকে না অর্থাৎ ব্ল্যাকহোল যত বিশাল হবে তার ইভেন্ট হরাইজান তত প্রশস্ত হবে। নি আরো বলেন, আমরা মনে করি মধ্যাকর্ষণ হচ্ছে এক্ষেত্রে সব সময় একটি আকর্ষণ শক্তি এবং খুবই বিশাল ব্ল্যাক হোলের ক্ষেত্রে এই আকর্ষণ এত বেশি হয় যে তা সবকিছুকে টেনে ভেতরে নিয়ে আসে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে আপনি খুবই বড় ইভেন্ট হরাইজেনের মধ্যে একে টানছেন। আপনি পাচ্ছেন বস্তুকে শুষে নেয়ার মতো অনে বড় স্থান। অপরদিকে ইভেন্ট হরাইজেন মিনি ব্ল্যাক হোলের ক্ষেত্রে একটি পরমাণুর ডায়ামিটার বা ব্যাসের ছাইতেও কম। অর্থাৎ গোটা গ্রহকে একটি মিনিব্ল্যাকহোল সহজেই ছাড়িয়ে যেতে পারে। যখন একটি বস্তুকনাকে একটি মিনিব্ল্যাক হোল আকর্ষণ করে তখন এটি খুব সম্ভবত নির্দিষ্ট দূরত্বের ইভেন্ট হরাইজেন থেকে ব্ল্যাকহোলটাকে আবর্তন করবে এবং মিলিয়ে যাবে না। মিনিব্ল্যাকহোল নিয়ে সাম্প্রতিক গবেষণায় এমনসব চমকপ্রদ তথ্য জানা গেছে। সূত্র : নাসা অনলাইন

No comments:

Post a Comment

ওয়ানপ্লাসের নতুন অক্সিজেন ওএস ১৫ আসছে AI নিয়ে

  অ্যান্ড্রয়েড ১৫  এর ওপর ভিত্তি করে আসছে  ওয়ানপ্লাসের  অক্সিজেন    ওএস  ১৫। অক্টোবরের ২৪ তারিখ বাংলাদেশ সময় রাত ৯:৩০ এ আনুষ্ঠানিকভাবে অপ...