Monday, September 19, 2011
পবিত্র হজ্ব ব্যবসা না তামাসা
প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য হজ্ব আদায় করা একটি ফরজ কাজ। সামর্থ থাকুক বা না থাকুক সবাই- চায় হজ্ব করতে। ইসলামে অবশ্য করণীয় হুকুম আহকামের মধ্যে হজ্ব চতৃর্থ। জীবনকে সঠিকভাবে চালাতে ও মন-মানসিকতাকে পরকালের জন্য তৈরী করতে পবিত্র হজ্ব খুবই গুরুত্ব বহন করে। মন ও জীবনকে পাপ ও পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত বিরতে রাখতে হজ্বের সফর বিরাট ভুমিকা রাখে। আমাদের কাছে হজ্ব যতটুকু গুরুত্ব বহন করে তেমনি আমাদের প্রতিপালক মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছেও হজ্ব অতীব মর্যাদা রাখে। ত্যাগ তিতিক্ষার এক সুমহান নিদর্শন পবিত্র হজ্ব। হজ্বের অভিধানিক অর্থ ঈমান আল গাযজ্বালী (রাঃ)’র মতে নিয়্যাত করে কোথাও যাওয়া বা পূণ্য সংকল্পে ভ্রমণে যাওয়া। হজ্বের সফরকে তাই আল্লাহ সুবানাহু তায়ালা অতীব গুরুত্ব ও মর্যাদার সাথে তুলনা করেছেন। সহীহ হাদিসেও পাওয়া যায় মাহবুবে মাওলা সরদারে দু’জাহান হযরত মোহাম্মদ (সঃ) ও হজ্বের সফরে অত্যাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনিই তাঁর জীবনের শেষ হজ্বে মানব জাতির জন্য ময়দানে আরাফাতে এক অমূল্য বক্তব্য দিয়েছেন যা বিদায় হজ্বেও ভাষণ হিসেবে সর্বত্র সমাদৃত। এই মূল্যবান ভাষণের প্রতিটি শব্দ প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য শিক্ষণীয়। তাই বিশ্বের প্রতিটি প্রান্ত থেকে মুসলিম নর-নারীরা চেষ্টা করে প্রতি বৎসর হজ্বে যাবার। যার কোন সামর্থ নেই হজ্বে যাবার সেও মাওলা সুবাহানাহু তায়ালার কাছে আকুতি জানায় যেন তিনি যেন মৃত্যুর আগে একটি বার তাঁকে পবিত্র হজ্বে যাবার তৈফিক দান করেন। অনেকের আকুতি মহান আল্লাহ তায়ালা শুনেন। হজ্জে যাবার সুপ্ত বাসনা মনে পোষণ করেন না এমন লোক পাওয়া দুষ্কর। আমার জানামতে এমনও লোক আছে যারা হজ্বে যাবার জন্য নিয়্যাত করে সঞ্চয় করে। সমগ্র জীবনের সঞ্জয়কৃত পুঁজি দিয়েও মৃত্যুর আগে একবার পবিত্র বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করতে চায়। হজ্বের সফর যে একেবারে সহজসাধ্য তা নয়। এই সফর কষ্টের এবং পরিশ্রমের হয়। অতীতে যাতায়াত করতে গিয়ে অনেকের সেই দূরত্বকে কমিয়ে দিয়েছে আকাশযান। বর্তমান যুগে আকাশ পথেই যাত্রা বা যাতায়াত করেন হাজীরা। অতীতের মত ব্যবস্থাপনাও নেই এখন। সৌদিআরবে হাজীদের জন্য সকল প্রকার সুবিধাবাদী বিদ্যামান। আগের চাইতে বর্তমান হাজীদের জন্য ব্যবস্থাপনা অভাব পরিলক্ষিত হয় না। বৎসরে একবারই অনুষ্ঠিত হয় বিধায় হাজী সাহেবদের ভীর হয় প্রচুর, তা সামল দিতে সৌদি সরকারকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। তাই সরকারের পক্ষ থেকে কিছু নিয়ম নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে এবং তা অগ্রীম জানিয়ে দেওয়া হয়। প্রত্যেক দেশ থেকেই যাতে হাজীরা সুষ্ঠভাবে হজ্ব কার্য সম্পাদন করতে পারেন। প্রায় সকল দেশেই তাদের এম্বেসীর মাধ্যেমে সেই নিয়মনীতির আলোকে ভিসা প্রতান করা হয়। ইদানীং ভার বেশি হওয়াতে দেশে দেশে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কতজন লোক হজ্ব পালনে যেতে পারবে। দেশ ভেদ কিছুটা সংখ্যায় ব্যতিক্রম রয়েছে। এক দেশ থেকে অন্য দেশ, ভাষায় ভিন্নতা ও ভিন্ন পরিবেশে যাওয়া তাই একার দ্বারা বিছু করা সম্ভব হয় না। এ ছাড়াও বহুবিধ সমস্যা থাকায় সরকারীভাবেই ব্যবস্থাপনা করা হয়। সেই থেকে বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশ সরকার হাজীদের জন্য প্রত্যেক বছর এই উদ্যেগ নেয়। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার বরাবরই ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতা বিগত কয়েক বছর বহুগুন বেড়েছে। চলিত বছরে তা চরম আকারে ধারণ করেছে। হাজীদের আবেগ অনুভুতি নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল একের পর এক তামাশা করে যাচ্ছে। সেই সুযোগে আরো কিছু এজেন্ট হাজীদের সাথে প্রতারণামূলক ব্যবসা করছে। মানুষের ঈমানী ও সরল অনুভুতিকে পুঁচি করে পাবত্র হজ্বকে নিয়ে তামাশা, ব্যবসা করার অধিকার কেউ দেয়নি সরকার কিংবা সরকার অনুমোদিত এজন্সীগুলোকে। হাজী ক্যাম্পে হাজীদের অবর্ণনীয় কষ্ট ও অব্যবস্থাপনার দরুণ আজ অনেকেই অতিষ্ঠ। এমনকি হাজী ক্যাম্পে হজ্ব যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এতে করে গোটা দেশেল ভাবমূর্তি বিনষ্ট হচ্ছে। বিশ্বেও মধ্যে বাংলাদেশ হচ্ছে অন্যতম মুসলিম দেশ, সেখানে হজ্ব নিয়ে ব্যবসা ও তামাসা অনাকাঙ্খিত ও বেনাদায়ক। যেখানে হাজীদের সবাই মিলে সহযোগিতা, সহমর্মিতা ও সাহায্য করা প্রয়োজন সেখানে ব্যর্থতা প্রতারণা, ব্যবসা ও তাদের অনুভুতি নিয়ে তামাশা করা কি উচিত? যতি তা না হয়, তা হলে কেন বারবার হাজীদের নিয়ে একই গছনার পুণরাবৃত্তি হয়। আমাদের আশেপাশের অমুসলিম দেশগুলো হজ্ব ব্যবস্থাপনা সম্পাদন করে মর্যাদা ও গুরুত্বের সহিত। আমাদের দেশ মুসলিম দেশ, হবার পরেও কেন এত ব্যর্থতা দেখায়, তা মোটেই বোধগম্য নয়। চলতি বছরে হজ্ব ব্যবস্থাপনায় সরকারকে সহায়তা করতে অনেক অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠান সাহায্যোর হাত সম্প্রসারিত করার পরেও সরকারের সম্মতি মিলেনি বলে অবাক হয়েছি। এই অবস্থা অব্যহত থাকলে বাংলাদেশ থেকে আগামীতে হজ্বে যাবার জন্য অনেকেই সাহস করবে না হয়তো। সময় থাকতে হজ্বের ব্যাপারে সুষ্ঠ উদ্যেগ নেয়া প্রয়োজন মনে করছি এবং সেই উদ্যেগে যেন ব্যবসায়িক কোন ফন্দি না থাকে। ঈমানী দায়িত্ব সঠিকভাবে সম্পাদন করলে আল্লাহ’র সন্তুষ্টি পাওয়া যায়। হজ্বের ক্ষেত্রে সেই দায়িত্ব পালন ঈমানী দায়িত্বের অন্তর্ভূক্ত বলে মনে করি সাথে সাথে সকল এজেন্টের প্রতিও নজর দেওয়া প্রয়োজন। ট্রেভেল এজেন্টদের ব্যবসায়িক নীতির জন্যও অনেক সময় বিপত্তি দেখা যায়। ট্রেভেল এজেন্টদের খামখেয়ালীর দরুণ এবারে ব্রিটেনেও হাজীরা কষ্টের সম্মুখীন হয়েছেন। গত বছরেও ভিসা জটিলতায় ব্রিটেন থেকে অনেকই হজ্বে যেতে পারেন নাই। অবশ্য ব্রিটেন সরকার কোন উদ্যেগ নেয় না, যা করার অুমোদিত ট্রেভেল এজন্টরাই করে। তাই অনেক এজেন্টই হাজীদের নিয়ে প্রতারণা করে। পবিত্র হজ্ব একটি ধর্মীয় বিধান এবং তা অবশ্যই করণীয় সামর্থবানদের জন্য। অনেকের জন্য হজ্ব খুবই গুরুত্বও রাখে। স্বয়ং রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনে সম্পূর্ণ একটি সুরা নাযিল করেছেন এবং সূরা হজ্ব নাম দিয়ে এই হজ্ব অনুষ্ঠানের মর্যাদা ও গুরুত্ব মুসলমান নর-নারীদেও কাছে আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। সুতরাং পবিত্র হজ্বকে নিয়ে নিয়ে ব্যবসা-তামাশা করা উচিত নয়। এবারের হজ্ব যাত্রীদেও প্রতি আমি সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। আল্লাহ সুবাহানাহু তায়ালা যেন সবাইকে সুষ্ঠভাবে হজ্ব সম্পাদন ও হজ্ব করার তাওফিক দেন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
ওয়ানপ্লাসের নতুন অক্সিজেন ওএস ১৫ আসছে AI নিয়ে
অ্যান্ড্রয়েড ১৫ এর ওপর ভিত্তি করে আসছে ওয়ানপ্লাসের অক্সিজেন ওএস ১৫। অক্টোবরের ২৪ তারিখ বাংলাদেশ সময় রাত ৯:৩০ এ আনুষ্ঠানিকভাবে অপ...
-
আপনার মোবাইল পানিতে পড়ে গেলে যত তারাতারি সম্ভব আপনার মুঠোফোনটিকে পানি থেকে তোলার ব্যবস্থা করুন। মনে রাখবেন, যত দেরী হবে আপনার মুঠোফোনটির ...
-
নতুন অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন কেনার পর এই অ্যাপ গুলো আপনার ফোনে না থাকলেই নয়। তো চলুন দেখে নিই অ্যান্ড্রয়েড এর কিছু বেসিক অ্যাপ … Andr...
-
(Install K lite Codec - For Download K-Lite Codec Pack 7.1.0 Full/ Corporate/ Standard...
No comments:
Post a Comment