অনেক বছর আগে, তাবেয়ীনদের সময়ে (সাহাবীদের পরের সময়ে)। বাগদাদ ছিল ইসলামী সাম্রাজ্যের রাজধানী। তৎকালীন প্রখ্যাত বহু আলিম এখানে বসবাস করতেন। তাই এটি হয়ে উঠেছিল ইসলামী জ্ঞানের কেন্দ্রভূমি।
একদিন রোমের রাজা একজন দূতকে মুসলিমদের উদ্দেশ্যে তিনটি প্রশ্নসহ পাঠালেন। দূত শহরে এসে খলিফাকে জানালেন যে, সে রোমের রাজার কাছ থেকে তিনটি প্রশ্ন এনেছেন এবং মুসলিমদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন তার উত্তর দেওয়ার জন্য।
খলিফা সকল আলিমদের একত্র হতে বললেন। রোমান দূত একটি উঁচু স্থানে দাঁড়ালেন এবং বললেন, আমি এসেছি তিনটি প্রশ্ন নিয়ে যদি আপনারা এর উত্তর দিতে পারেন আমি এ স্থান ত্যাগ করব প্রচুর সম্পদ রেখে যা আমাকে রোমের রাজা সঙ্গে দিয়ে দিয়েছেন।
প্রশ্নগুলো হল-
. আল্লাহর আগে কি ছিল?
. আল্লাহ কোন দিকে মুখ করে আছেন?
. এই মুহুর্তে আল্লাহ কোন কাজে নিয়োজিত আছেন?
সবাই চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেলেন; এর মধ্যে একটি ছোট বালক খলিফার কাছে এ প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবার জন্য অনুমতি চাইল; খলিফা তাকে অনুমতি দিলেন।
প্রশ্নোত্তর শুরু হল :
বালক : আপনি কি গুনতে জানেন?
দূত : হ্যাঁ।
বালক : তাহলে ১০ থেকে উল্টো দিকে গুনুন।
দূত : (দূতটি গননা শুরু করল) ১০, ৯, ৮,...... ১।
বালক : ১- এর আগে কি?
দূত : ১- এর আগে কিছুই নেই।
বালক : ঠিক আছে গাণিতিক একের আগে যদি কিছুই না থাকে তাহলে আপনি কিভাবে আশা করেন কি থাকবে এই ‘এক‘- এর আগে যা নিশ্চিত সত্য, শাশ্বত, চিরস্থায়ী, সুস্পষ্ট।
(বালকটির স্পষ্ট উত্তরে দূতটি হতবিহ্বল হয়ে গেল, কিছু অস্বীকার করতে পারল না।)
দূত : তাহলে এখন বল, আল্লাহ কোন দিকে মুখ করে আছেন?
বালক : একটি মোমবাতি আনুন এবং তাতে আগুন জ্বালান
(মোমবাতি জ্বালানো হল)
বালক : এখন বলুন আগুনের শিখা কোন দিকে মুখ করে আছে ?
দূত : এটাতো চতুর্দিকেই আলো ছড়াচ্ছে; এটা কোন এক দিকে নির্দিষ্ট নেই।
বালক : যদি এই বস্তু চতুর্দিকেই আলো ছড়াতে পারে; তাহলে আপনি কিভাবে এরকম অনুমান করতে পারেন আল্লাহ সম্পর্কে যে তিনি নির্দিষ্ট কোন একটি দিকে মুখ করে থাকবেন, যিনি আকাশ ও পৃথিবীর অধিপতি; সকল আলোর আলো।
(রোমান দূত বোকা বনে গেল। সে অবাক বিস্ময়ে অভিভূত হল। এতটুকু একটি বালক তার সব প্রশ্নের এত সাবলীলভাবে উত্তর দিচ্ছে যে, তার যক্তি-প্রমাণের কাছে কোনরূপ দ্বিমত পোষণ করা যাচ্ছে না। অবশেষে সে তার শেষ প্রশ্ন করার জন্য মুখ খুলতে গেল।)
বালক : থামুন। এখানে প্রশ্ন করছেন আপনি আর জবাব দিচ্ছি আমি। আর যেহেতু উত্তরদাতা প্রশ্নকর্তা থেকে বড় তাই আপনি নিচে নেমে আসুন আর আমাকে উপরে আসন গ্রহন করতে দিন ।
এরপর দূত নিচে নেমে এল এবং বালকটি উচু স্থানে আসন গ্রহন করার পর দূত তার শেষ প্রশ্নটি করল।
দূত : বল এখন আল্লাহ কি করছেন?
বালক : এই মুহুর্তে আল্লাহ তোমাকে উচু স্থান থেকে নিচে নামিয়ে অপমান করেছেন এবং আমাকে নিচু স্থান থেকে উচু স্থানে উঠিয়ে সম্মানীত করেছেন। আর এভাবেই যে আল্লাহর একত্ব বিশ্বাস করে তিনি তাকে উপরে উঠিয়ে সম্মানীত করেন এবং আল্লাহর একত্বে অবিশ্বাসীদেরকে অপদস্থ করেন।
অতঃপর রোমান দূতের আর কিছু বলার থাকল না, সেই স্থান ত্যাগ করা ছাড়া।
এই ছেলেটি পরবর্তীতে বড় হয়ে ইসলামের এক মহান জ্ঞানী পন্ডিত হিসেবে আবির্ভূত হন এবং তিনিই হলেন ইমাম আবু হানিফা (র)।
আল্লাহ তা’য়ালা তাকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করুন। আমীন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
ওয়ানপ্লাসের নতুন অক্সিজেন ওএস ১৫ আসছে AI নিয়ে
অ্যান্ড্রয়েড ১৫ এর ওপর ভিত্তি করে আসছে ওয়ানপ্লাসের অক্সিজেন ওএস ১৫। অক্টোবরের ২৪ তারিখ বাংলাদেশ সময় রাত ৯:৩০ এ আনুষ্ঠানিকভাবে অপ...
-
আপনার মোবাইল পানিতে পড়ে গেলে যত তারাতারি সম্ভব আপনার মুঠোফোনটিকে পানি থেকে তোলার ব্যবস্থা করুন। মনে রাখবেন, যত দেরী হবে আপনার মুঠোফোনটির ...
-
(Install K lite Codec - For Download K-Lite Codec Pack 7.1.0 Full/ Corporate/ Standard...
-
নতুন অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন কেনার পর এই অ্যাপ গুলো আপনার ফোনে না থাকলেই নয়। তো চলুন দেখে নিই অ্যান্ড্রয়েড এর কিছু বেসিক অ্যাপ … Andr...
No comments:
Post a Comment