ব্যাটলফিল্ড কভার
ব্যাটলফিল্ড ৩, ব্যাটলফিল্ড সিরিজের সর্বশেষ গেম একইসাথে যথেষ্ট ব্যবসাসফল একটি গেমও বটে। গেমটি এ পর্যন্ত রিলিজ হওয়া সব শুটার গেমের জন্য একটি ল্যান্ডমার্ক ও ভবিষ্যতের শুটার গেমগুলি কতটা বাস্তবসম্মত হতে পারে সে সম্পর্কে বেশ ইতিবাচক ধারণা প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। গত বছর অক্টোবরের ২৫ তারিখ মুক্তি পাওয়া এই গেমটি এ পর্যন্ত ১০ মিলিয়ন কপিরও বেশি বিক্রি হয়েছে, যা বেশ ভালভাবেই কল অফ ডিউটি সিরিজের একক আধিপত্যে প্রভাব ফেলেছে। তাই আশা করা যায় ভবিষ্যতে কল অফ ডিউটি তাদের আধিপত্য ধরে রাখার ব্যাপারে সচেষ্ট হবে।
এখন আসি গেমের কথায়, গেমের মূল চরিত্র ৬ জন- মার্কিন মেরিন ব্ল্যাকবার্ন ও মন্টেজ, ট্যান্ক অপারেটর মিলার, ফ্লাইট অফিসার হকিন্স, রাশিয়ান স্পাই ডিমা এবং গেমের খলচরিত্র সলোমন।
এই গেমের একটা ব্যাপার কল অফ ডিউটি সিরিজের ব্ল্যাক অপ্সের সাথে পুরোপুরি মিলে যায়। সেটা হল ব্ল্যাক-অপ্সের মত এই গেমের কাহিনীও গেমের মূল চরিত্র অর্থাৎ ব্ল্যাকবার্নকে ইন্টারোগেশনের মধ্যে দিয়ে আগাতে থাকে। গেমের কাহিনী একটু প্যাচাল, প্রতিটা মিশনের আগের ইন্টারোগেশনের ভিডিও না দেখলে ১ম বারেই বোঝা একটু টাফ হবে।
গেমের শুরুতেই দেখা যায় সার্জেন্ট ব্ল্যাকবার্ন সলোমনের পিছু নিয়ে একটা ট্রেনে উঠে। একটা পর্যায়ে সার্জেন্ট ব্ল্যাকবার্ন সলোমনের কাছে ধরাশায়ী হয়। অথচ এই সিকোয়েন্স কিন্তু আসলে গেমের প্রায় শেষ দিকের। এই মিশনের পরই শুরু হয় গেমের আসল কাহিনী। আমেরিকান রেন্জারদের একটি টিম নিখোজ হয়ে যায়, তাদের খুজতে আরেকটি রেস্কিউ টিম পাঠানো হয়। এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে রেস্কিউ টিমসহ অনেকেরই মৃত্যু হয়। কিন্তু সার্জেন্ট ব্ল্যাকবার্ন সারভাইভ করে। এরপরেই কাহিনী অন্য ধারায় ঘুরে যায়, সলোমনকে আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে আমেরিকান ক্যারিয়ার থেকে ইরানের একটি এয়ারপোর্টের উপর বিমান হামলা হতে থাকে, অপরদিকে ভূমিতে চলে ট্যান্ক আক্রমন। এভাবে করে আমেরিকান বাহিনী সলোমনকে খোজার চেষ্টায় থাকে। অপরদিকের রাশিয়ান পোর্টেবল ওয়ারহেড সরানোর অভিযোগে রাশিয়ান গোপন গোয়েন্দা সংস্থাও সলোমনকে খুজতে থাকে। এতকিছুর পরেও শেষ রক্ষা হয় না, সলোমন একটা বোমার প্যারিসে ডিটোনেট করতে সফল হয়ে। পরে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়। কিন্ত রাশিয়ান গোয়েন্দা ডিমা এবং সার্জেন্ট ব্ল্যাকবার্নের কারনে তার উদ্দেশ্য শেষ পর্যন্ত সফল হয় না।
গেমের কাহিনী সাম্প্রতিক আর সব গেমের মতই কাল্পনিক। এই কল্পনাকে ফুটিয়ে তুলতে পটভূমি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ইরান, ফ্রান্স, রাশিয়া ও আমেরিকার বিভিন্ন লোকেশনকে। সেই সাথে এই লোকেশনগুলোর বাস্তবতাকেও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সুনিপুনভাবে।
অ্যামবুশের শিকার আমেরিকান সৈন্য
মেশিনগান ফায়ারিং এর ফলে সৃষ্ট ধংশলীলা
থান্ডার রান মিশনের একটি অংশ
ইনডোর কমব্যাট (লাইটিংগুলো চোখে পড়ার মত)
ফাইটার জেটের ককপিট ভিউ
রকেটলন্চার দিয়ে স্নাইপার নিধন ( বিল্ডিং ডিস্ট্রাকশনটা খেয়াল করেন)
অত্যন্ত বাস্তবধর্মী গ্রাফিক্সযুক্ত এই গেমের সবথেকে বড় ব্যাতিক্রমধর্মী যে ব্যাপারটা দেখা গেছে তা হল গেমপ্লের বিভিন্ন যায়গাতে ঘটা এক্সপ্লোশন, যেটা প্রায় পুরোটাই বাস্তব মনে হয়। গেমের মধ্যে আছে জেটপ্লেন এবং ট্যান্ক চালানোর মিশন যা গেমের অন্যতম সেরা আকর্ষন।এছাড়াও যখন বিভিন্ন আর্মস ফায়ার করার সময় মনে হবে আপনি নিজেই ঐটার ট্রিগার ধরে আছেন। আর এইসবই সম্ভব হয়েছে ফ্রস্টবাইট ২.০ ইন্জিনের কারনে।
গেমের অস্ত্রভান্ডার বেশ সমৃদ্ধ এবং মডার্ন ওয়ারফেয়ার ৩ এর সাথে প্রায় পুরোপুরি মিলে যায় যা বেশ আশ্চর্যজনক। এছাড়াও ট্যান্ক, ফাইটারজেট চালানোর এক্সপেরিয়েন্স তো আছেই।
গেমের সবকিছুই বলা যায় বেশ ভাল, কিন্তু ব্যাটলফিল্ডের স্টোরিলাইনটা আমার তেমন পছন্দ হয় নাই। গেমপ্লে অসম্ভব রকমের রিয়েলিস্টিক হওয়া সত্ত্বেও গেমের চরিত্রগুলোকে কখনও গেমের কাহিনীর সাথে মিশে গেছে এমন মনে হয় নাই। কেমন যেন একটা কৃত্তিমতা থেকে গেছে।
এইবার আসেন একটা ভিডিও দেখি যাতে মডার্ন ওয়ারফেয়ার ৩ এবং ব্যাটলফিল্ড ৩ দুইটা গেমই পাশাপাশি দেখান হয়েছে। যারা ব্যাটলফিল্ড এখনও খেলেন নাই তাদের জন্য ভিডিওটা হাই-রেজুলিউশনে দেখা অতি আবশ্যক।
টরেন্ট ডাউনলোড লিন্ক
পোস্ট আপডেট করছিলাম, ঐটাও অ্যাড করে দিয়েন কিন্তু...!!!
ReplyDeletehttp://www.somewhereinblog.net/blog/gamerboy_bd/29527710
ReplyDeleteসামু থেকে পুরা কপি-পেস্ট করে দিয়েছেন।