Monday, July 1, 2013

মেট্রো শেষ বাতি (লাস্ট লাইট) গেম বাংলা রিভিউ

Cover
লাস্ট লাইট এর আক্ষরিক অর্থ শেষ বাতি হলেও এর রূপগত অর্থ হল শেষ সম্বল। গেমে আপনাকেও অনেকটা ওই মনুষ্য জাতির শেষ সম্বল হিসেবেই আবির্ভূত হতে হবে। শেষ বাতিটাও যদি নিভে যায় তবে কড়াল অন্ধকার গ্রাস করে নিবে। তাই বাংলা সিনেমার মত ‘বংশের শেষ বাতি’ হিসেবে আর্টিওম শেপার্ড আবির্ভূত হবে। (এখন আপনারা চিন্তা করছেন, কি এক আজাইরা কথা কইয়া শুরু করলো) :P
মেট্রো লাস্ট লাইট গেমটি একটি First Person Shooter বা FPS গেম। ডেভেলপার হলো ইউক্রেনের গেম ডেভেলপার কোম্পানি 4A Games আর পাবলিশের দায়ীত্বে ছিল ডিপ সিলভার। গেমটি ছাড়া হয় উইন্ডোজ, প্লেস্টেশন ও এক্সবক্স ৩৬০ তে ২০১৩ সালের মে মাসে।
Cover
মেট্রো লাস্ট লাইট শুরু হয় মেট্রো ২০৩৩ এর খারাপ এন্ডিং যেখানে শেষ হয়েছিল তার কিছু পরে থেকে। মেট্রো ২০৩৩ এর খারাপ এন্ডিং এ আর্টিওম সব “দ্যা ডার্ক ওয়ান” কে মেরে ফেলেছিল নিউক্লিয়ার বোমা মেরে। সেখান থেকে মেট্রোতে ফিরে সে বিশ্রাম নেয়। মেট্রো লাস্ট লাইট সেই বিশ্রাম থেকে জাগার পরে থেকেই শুরু হয়। এখানে আর্টিওম কে রেঞ্জার এ পদোন্নতি দেয়া হয়। মেট্রো লাস্ট লাইটে দেখা যায় যে বোমা মারার পরো একটি শিশু “ডার্ক ওয়ান” বেঁচে যায় কোনোভাবে। আর্টিওমকে বলা হয় যেন সার্ফেসে গিয়ে তাকে মারে। কিন্তু আর্টিওম সে কাজ করতে গিয়ে ব্যার্থ হয়। উল্টো সে শত্রুদের হাতে ধরা পরে। এরপর নানান ঘটনা ঘটতে থাকে। আর বিভিন্ন রহস্য উন্মোচিত হতে থাকে।
গেমের পটভূমি ২০৩৩ সালের রাশিয়া। যাতে এমন একটি এক্সিডেন্ট হয় যার কারনে পৃথিবীর উপরিভাগে মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। সবাই সরে আসে রাশিয়ার সুবৃহৎ মেট্রো রেল নেটোর্য়াকে যা আন্ডারগ্রাউন্ডে অবস্থিত। এদিকে উপরিভাগে তো সব প্রানি মিউট্যান্ট হয়ে যায়। এমনকি চিংড়িও। এই উপরিভাগেই ছিল ডার্ক ওয়ান দের বসবাস। মেট্রোতে মানুষের মানবেতর জীবন যাপনের চিত্র খুব সুন্দর ভাবেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। গেমের পরিবেশ বেশ অন্ধকারচ্ছন্ন। মেট্রোতে কিছু যায়গায় তো টর্চলাইট ছাড়া কিছু দেখাই যায়না। উপরিভাগে কুয়াশার জন্য কস্ট হয় দেখতে।
মেট্রো গেমগুলোর একটি অনন্য দিক হলো এর গ্যাস মাস্ক, ঘড়ি ও বুলেট কারেন্সি। প্রথমে গ্যাস মাস্কের কথা বলি। সার্ফেস অর্থাৎ মেট্রোর উপরের জগতে বিষাক্ত গ্যাসে পরিপুর্ন। এ যায়গায় বাঁচতে হলে গ্যাসম্যাস্ক অবস্যকীয়। কিন্তু গ্যাস মাস্কের ফিল্টার আনলিমিটেড নয়। এটি ২ মিনিট থেকে শুরু করে ১০ মিনিট পর্যন্ত ব্যাকাপ দেয়। এর পর তা চেঞ্জ করতে হয়। কিন্তু ফিল্টার খুজে বের করতে হয়। ফিল্টার ফুরিয়ে গেলে আর্টিওমের মৃত্যু ঘটে। এরপর ঘড়ির কথায় আসি। আর্টিওম একটি ঘড়ি পড়ে। যার সময়
বর্তমান সময় নির্দেশ করে, গেমের সময় নয়। বুলেট কারেন্সি মানে হলো এখানে বুলেট=টাকা। পৃথিবীর উপরিভাগ বসবাসের অযোগ্য হবার আগের তৈরী বুলেটগুলো বর্তমানে টাকা হিসেবে ব্যাবহৃত হয়। আর
গোলাগুলির জন্য ব্যাবহৃত হয় সস্তা বুলেট। বুলেট কারেন্সি কিন্তু আপনি ইচ্ছা করলে অস্ত্রে ব্যাবহার করতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে গুলি করা মানে আক্ষরিক অর্থেই টাকা পোড়ানো হয়ে যাবে। টাকা দিয়ে অস্ত্র, বোমা, ছুরি ও সস্তা গুলি কিন্তে হয়। তাই টাকা নষ্ট করা মোটেও কাম্য নয়।
গেমের অস্ত্রসস্ত্র হলো পুরোনো নতুন মেশানো। মানে পুরোনো আমলে রাশিয়ান AK-47, RPK এসবো
আছে আবার নয়া নয়া তৈরী করা অস্ত্রও আছে। লাস্ট লাইটে নতুন একটি ফিচার যোগ করা হয়েছে
এটাচমেন্ট। মানে আপনি আপনার অস্ত্রে বিভিন্ন আনুষাঙ্গিক জিনিষপত্র কিনে যুক্ত করতে পারবেন যা
যুদ্ধক্ষেত্রে কাজে লাগবে।

গেমটা এনভিডিয়ার জন্য অপটিমাইজ করা। তাই এএমডির গ্রাফিক্স ব্যাবহারীরা সমস্যার সম্মুখিন হতেপারেন। এনভিডিয়ার ফিজিক্স এতে প্রয়োগ করা হয়েছে যা AMD এর ব্যাবহারকারীরা উপভোগ করতেঅক্ষম। AMD র ব্যবহারকারীরা প্রচুর বাগ এ পরবেন। আমি নিজেও পড়েছিলাম ২ বার।

মেট্রো লাস্ট লাইটে মোটামুটি ১০ ঘন্টার সিঙ্গেলপ্লেয়ার গেমপ্লে রয়েছে। রয়েছে সহস্যজনক ও আকর্ষনীয়
কাহিনী। যা আপনাকে গেমটি শেষ করতে আগ্রহী করে তুলবে। তবে বরাবরের মত এতে কোনো
মাল্টিপ্লেয়ার বা অনলাইনে খেলার অপশন নেই। গেমে দুটো মোড আছে। রেন্ঞার মোড ও নরমাল
মোড। রেঞ্জার মোডে জিনিষপত্র খুজে কম পাওয়া যাবে। তবে নরমাল মোডে সহজেই জিনিষপত্র খুজে
পাওয়া যাবে। যারা একটু চ্যালেঞ্জের খোজ করছেন তারা রেঞ্জার মোডে খেলতে পারেন।



গেম চালাতে পিসিতে কমপক্ষে লাগবে,
Rating
কোর ২ ডুয়ো ২.২ গিগাহার্জ সিপিউ,
২ গিগা RAM
৫১২ মেগা ভিডিও মেমোরি,
৭ গিগা যায়গা হার্ডিস্কে।

No comments:

Post a Comment

ওয়ানপ্লাসের নতুন অক্সিজেন ওএস ১৫ আসছে AI নিয়ে

  অ্যান্ড্রয়েড ১৫  এর ওপর ভিত্তি করে আসছে  ওয়ানপ্লাসের  অক্সিজেন    ওএস  ১৫। অক্টোবরের ২৪ তারিখ বাংলাদেশ সময় রাত ৯:৩০ এ আনুষ্ঠানিকভাবে অপ...